বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে অপহরণের তিন দিন পর ৭ বছরের শিশু বাপ্পীকে নিরাপদে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গত বুধবার (৩০ জুলাই) উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের রাঙ্গাঝিরি এলাকায় এ অপহরণের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ৩০ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্ত সৌদি প্রবাসী সাইফুল ইসলামের বাড়িতে হানা দেয়। দুর্বৃত্তরা দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং তার ৭ বছরের ছেলে বাপ্পীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
পরদিন ভিন্ন ভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে অপহরণকারীরা মুক্তিপণের জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি করে এবং তা না দিলে শিশুটিকে হত্যার হুমকি দেয়। পরে খবরটি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেয় বান্দরবান জেলা পুলিশ।
পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার, পিপিএম (বার)-এর নির্দেশে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা ও কাগজীখোলা পুলিশ ফাঁড়ির একাধিক আভিযানিক দল তাৎক্ষণিকভাবে তৎপরতা শুরু করে। এতে অপহরণকারীদের অবস্থান শনাক্ত করতে শুরু হয় পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় অভিযান এবং নিবিড় নজরদারি।
বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি ও স্থানীয় সূত্রের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ অবশেষে অপহরণকারীদের দল থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
অপহরণকারী রুহুল আমিন (২০) কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বৌঘাটা গ্রামের মোঃ হাসেম ও রোকসানা বেগমের পুত্র। তার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহের পর পুলিশের একটি বিশেষ টিম শুত্রুবার (১ আগস্ট) রাতে অপহৃত শিশুকে উদ্ধার করে।
অভিযানের পর পুলিশ জানায়, উদ্ধার হওয়া শিশু বাপ্পী বর্তমানে সম্পূর্ণ সুস্থ আছে। তাকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অপহরণে জড়িত অন্য সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।
এদিকে ঘটনাটি এলাকায় চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই অপহরণের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্রুত পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। একই সঙ্গে পাহাড়ি এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে একটি মামলা রুজু করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ও মিডিয়া ফোকাল পয়েন্ট আবদুল করিম বলেন, এ ঘটনায় আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। অপরাধী যেখানেই থাকুক না কেন, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। পুলিশ এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
হাত-পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু
হোটেলে মিললো দক্ষিণী অভিনেতার মরদেহ