ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

লাভের স্বপ্ন দেখছেন ভৈরবের খামারিরা

আপডেট : ১০ জুন ২০২৪, ০২:৫৩ পিএম

অবৈধ পথে ভারত থেকে গরু আমদানি না হলে এবার লাভের মুখ দেখার স্বপ্ন বুনছেন কিশোরগঞ্জের ভৈরবের কয়েক হাজার গরু খামারি।

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে প্রতিবছরের মতো এবারও ভৈরবের প্রায় দুই হাজারের বেশি ছোট-বড় খামারে কোরবানির ১৮ হাজার পশু লালন-পালন করা হয়েছে। এসব খামারি কোরবানি উপলক্ষ্যে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছেন। কোরবানি পশু মোটাতাজাকরণে কোনো ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার করা হয়নি।

উপজেলা প্রাণিজ সম্পদ কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এই উপজেলায় গত এক বছরে গরু মোটাতাজাকরণে প্রায় তিনশ নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ১৮ হাজার কোরবানির পশু। ভৈরবের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী জেলা উপজেলাগুলোতেও বিক্রি করা যাবে কোরবানির পশু। এসব গরু এক বছর আগে দেশের বিভিন্ন হাট থেকে কিনে লালন-পালন শুরু করেন খামারিরা।  এবছর কোরবানি যোগ্য পশুর সংখ্যার বেড়েছে প্রায় ৩ হাজার। যা এই উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলার চাহিদা মেটাতে পারবে। 

এবারই প্রথম কোরবানির পশু মোটাতাজাকরণে খামার গড়ে তুলেছেন ভৈরব উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের ছিদ্দিরচরের বাসিন্দা নারী উদ্যোক্তা মারিয়া ইসলাম। তিনি ঈদে বিক্রির জন্য শাহীওয়াল, সিন্দি, নেপালী, দেশীসহ বিভিন্ন প্রজাতির ৩০টি গরু ও ১০টি ছাগল খামারে লালন-পালন করছেন।

খামারী মারিয়া ইসলাম জানান, ছোট বয়স থেকেই গরুর খামার গড়ে তোলার একটা স্বপ্ন ছিলো। ভাবতাম যখন আল্লাহতালা তৌফিক দিবেন তখন একটি গরুর খামার গড়ব। যখন নিজে স্বাবলম্বী হই, তখনই ছোটবেলার স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য এই বছর প্রথমবারের মতো বড় পরিসরে গরু ও ছাগলের খামার গড়ে তুলি। খামারে কোরবানির ঈদে বিক্রির উপযোগী বিভিন্ন প্রজাতির ৩০টি গরু মোটাতাজাকরণ করেছি। 

তিনি আরও জানান, তার খামারে একটি ষাঁড় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় কিনে ৪ মাস লালন পালন, খাবার, ঔষধ, শ্রমিকসহ বিভিন্ন খরচ পড়েছে আরও ১ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে গরুটা যদি ২ লাখ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায় তাহলে লাভবান হওয়া যাবে। তবে বাজারে গোখাদ্যের বাড়তি দামের কারণে খামারিদের খরচ বেশি পড়ছে। 

খামারের পরিচর্যাকারী মনির হোসেন বলেন, আমাদের খামারের গরুগুলিকে সম্পূর্ণ দেশীয় উপায়ে লালন-পালন করি। পুরোপুরি দেশীয় খাদ্য ও চাষকৃত ঘাস খাইয়ে পশুদের মোটাতাজা করেছি। তাই  পশুগুলো সম্পূর্ণই নিরাপদ ও হালাল। 

কালিকাপ্রসাদ এলাকার ছিদ্দিরচর গ্রামের আতকাপাড়া এলাকার কৃষক আব্দুর রহিম পারিবারিকভাবে দুটি উন্নত জাতের ষাঁড় কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য মোটাতাজা করছেন। তিনি জানান, গরুর খাবারের দাম বাবদ তাদের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। এখন যদি ভারত থেকে গরু আসে, তাহলে তো তাদের অসুবিধা। ভারত থেকে গরু না এলে তারা লাভবান হবেন।

পৌর শহরের ভৈরবপুর এলাকার নতুন খামারি রাকিব রায়হান জানান, ছোটবেলা থেকেই গরু পালনের শখ ছিল। তাই শখ থেকেই পশু পালনের আগ্রহ বেড়েছে। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে দেশীয় খাবার খাইয়ে পশুগুলিকে লালন পালন করছেন। 
 
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মনিরুজ্জামান তরফদার জানান, খামারিরা যেন তাদের পালিত পশু বিক্রি করে লাভবান হতে পারেন সেজন্যই তাদেরকে বিভিন্নভাবে উদ্ধৃদ্ধ করছি। এখানকার খামারিরা সারাবছর তাদের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। পশু মোটাতাজাকরণে খামারিদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। 

AHA
আরও পড়ুন