ভাষা, সংস্কৃতি ও হাজার মাইলের দূরত্বকে হার মানিয়েছে ভালোবাসা। সেই ভালোবাসার টানেই রাজবাড়ীতে এসে এক তরুণীকে বিয়ে করেছেন চীনের নাগরিক ঝং কেজুন (৪৬)। ঘটনাটি জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অসংখ্য মানুষ নবদম্পতিকে একনজর দেখতে ভিড় করছেন বাড়িতে।
চীনা যুবক ঝং কেজুন সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া তরুণীর নাম মোছা. রুমা খাতুন (২১)। তিনি রাজবাড়ী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের বিনোদপুর ড্রাই আইস ফ্যাক্টরি এলাকার অটোচালক মো. বাবু খানের মেয়ে। চীনা যুবক ঝং কেজুন চীনের গুয়াংসি লিউঝো শহরের বাসিন্দা এবং পেশায় চাকরিজীবী।
গত ২ সেপ্টেম্বর আদালতে মুসলিম রীতিনীতি মেনে ঝং কেজুনের সঙ্গে রুমার বিয়ের রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়।
জানা গেছে, এক বছর আগে চীনের সোশ্যাল মিডিয়া লিটল রেড বুক-এ চীনা নাগরিক ঝং কেজুনের সাথে পরিচয় হয় রাজবাড়ী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের বিনোদপুর গ্রামের অটোচালক মো.বাবু খানের মেয়ে মোছা. রুমা খাতুনের (২১) সঙ্গে। পরিচয়ের পর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সম্পর্কের টানেই চীন থেকে বাংলাদেশে আসেন ঝং কেজুন।
২ সেপ্টেম্বর রাজবাড়ী নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে রুমা খাতুনকে বিয়ে করেন তিনি। পরে মসজিদের ইমামের মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা কাবিনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়। বর্তমানে নবদম্পতি রুমার বাড়িতেই অবস্থান করছেন।

কনে রুমা খাতুন বলেন, আমি এসএসসি পাশের পর আর পড়ালেখা করিনি। এক বছর আগে চীনের সোশ্যাল মিডিয়া লিটল রেড বুকে ঝং কেজুনের সাথে আমার পরিচয় হয়৷ পরে আমরা দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেই। ঝং কেজুন প্রথমে বাংলাদেশে এসে আমার বাড়িতে আসেন। কিন্তু পরিবার রাজি না থাকায় ফরিদপুরে চলে যান। পরে পরিবারের সম্মতিতে ২ সেপ্টেম্বর কোর্টে বিয়ে করি। এখন আমরা সংসার করছি। তিনি আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। সকলের কাছে দোয়া চাই।
রুমার বাবা অটোচালক মো. বাবু খান বলেন, প্রথমে আমি এ বিয়েতে রাজি ছিলাম না। পরে জামাই ও পরিবারের লোকদের ওপর সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেই। মেয়ে রাজি থাকায় বিয়ে হয়েছে। এখন জামাই আমার বাড়িতেই আছে। সে জানিয়েছে মেয়েকে চীনে নিয়ে যাবে।
রুমার পরিবারের সদস্যরা জানান, বাঙালি খাবার আর সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে শুরু করেছেন ঝং কেজুন। স্ত্রী রুমার সঙ্গে প্রতিদিন গ্রামের পথঘাট ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। এলাকাবাসীও ঝং কেজুনকে দেখতে বাড়িতে ভিড় করছেন। অনেকেই আগ্রহ নিয়ে ঝং কেজুনের সঙ্গে কথা বলছেন। কেউ গুগলে অনুবাদ করে চীনা বা ইংরেজি ভাষায় কথা বলছেন। কেজুন তাদের কথার উত্তর দিচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, চীনের এক যুবক এসে বিয়ে করে সংসার করছে-এ খবর ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিদিনই বহু মানুষ কৌতূহলবশত তাদের দেখতে আসছেন। দিন যত যাচ্ছে, দর্শনার্থীর ভিড়ও তত বাড়ছে।
