নরসিংদীতে ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে হুড়োহুড়ি এবং দেওয়াল ধসসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত শতাধিক মানুষ।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে নরসিংদী সদর ও পলাশ উপজেলার মধ্যবর্তী স্থানে সৃষ্ট এই ভূমিকম্পে জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ফাটলসহ এসব ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
সন্ধ্যায় নরসিংদীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন ক্ষয়ক্ষতির এই প্রাথমিক তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে এক শিশু ও ৩ জন বয়স্ক ব্যক্তি রয়েছেন।
নিহতরা হলেন-
১. হাফেজ ওমর (০৮) সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের গাবতলি এলাকায় নির্মাণাধীন ভবনের ওপর থেকে মালামাল নিচে পড়লে চারজন আহত হন। এর মধ্যে শিশু ওমরকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ওমরের বাবা দেলোয়ার হোসেন উজ্জ্বলের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
২. কাজেম আলী ভূইয়া (৭৫) পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নের মালিতা পশ্চিমপাড়া গ্রামে মাটির দেয়াল ধসে চাপা পড়েন এই বৃদ্ধ। জেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
৩. নাসিরউদ্দিন (৬০) পলাশ উপজেলার ডাংগা ইউনিয়নের ইসলামপাড়া গ্রামের এই বাসিন্দা ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত হয়ে ফসলি জমি থেকে দৌড়ে রাস্তায় ওঠার সময় নিচে পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
৪. ফোরকান (৪০) শিবপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের গাজীকিতলা গ্রামে কম্পনের সময় গাছ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি। প্রথমে নরসিংদী জেলা হাসপাতাল ও পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে ভূমিকম্পের তীব্রতায় ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাবস্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ইউনিটটি বন্ধ করে দেয়। কম্পনের ফলে সাবস্টেশনের বিপুল পরিমাণ পিটি (প্রডাকশন ট্রান্সফরমার) ভেঙে পড়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া ঘোড়াশাল-পলাশ ফার্টিলাইজার কারখানায় কম্পনজনিত কারণে মেশিনারিজ ভাইব্রেশনের ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইউরিয়া উৎপাদন সাময়িক বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে মেশিনারিজ চেকিংয়ের কাজ চলছে।
ভূমিকম্পের ফলে নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও সার্কিট হাউসসহ জেলার শতাধিক ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। আতঙ্কে বহুতল ভবন থেকে নামতে গিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন জানান, ভূমিকম্পে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে।
নির্বাচনি দায়িত্ব পালনই মূল লক্ষ্য: গাজীপুরের নবাগত জেলা প্রশাসক
সাতক্ষীরায় প্রথম নারী জেলা প্রশাসক মিজ আফরোজা আখতার