বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম জ্যোতি বলেছেন, ভাঙচুর, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, অগ্নি সন্ত্রাস এবং মানুষ প্রতি সহিংসতা বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। কোনোকিছুর বিনিময়ে এগুলো মানা হবে না।
চাঁদাবাজি-দখলদারি দেখলে সাথে সাথে পুলিশকে জানান। পুলিশ যদি না মানে, পুলিশকে মানতে বাধ্য করা হবে। অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের হাতে তুলে দেন। কুষ্টিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্ব আপনারা নিজেদের কাঁধে তুলে নিন। আপনার এলাকার নিরাপত্তা আপনি দেবেন। আমার কুষ্টিয়াতে যেন ভাঙচুর, রক্তপাত ও ধর্মীয় সহিংসতা না হয়।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে কুষ্টিয়া পাবলিক লাইব্রেরির সামনে গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণায় শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ, দেশ পুনর্বাসন, রাষ্ট্র সংস্কার, ঐক্য প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, কুষ্টিয়া জেলাতে যত অন্যায় কার্যক্রম সংঘটিত হচ্ছে। অতি দ্রুত যেন প্রশাসন নজরে আনে। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা যায়। সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ভাঙ্গা গাছ থেকে ফল পেড়ে খাওয়ার একটু সহজ। একটু সময় দিন, আরও একটু স্ট্যাবলিটি আসুক। ধীরে ধীরে জনগণও বুঝতে শিখবে যে, দলীয় ছত্রছায়া থেকে বের হয়ে স্বাধীনভাবে বাঁচার স্বাদটা কেমন হয়।
সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম আরও বলেছেন, ‘আপনারা নিজেরা আত্মসম্মানবোধটা বজায় রেখে আইনের সাহায্য নিন, প্রশাসনের কাছে যান। তদবির করে বা কোনো রাজনৈতিক নেতার দারে যাবেন না। প্রশাসনের কাছে যান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে যান। আপনারা যদি ওনাদের উপর আস্থা রাখতে শুরু করেন, তাহলে উনারাও শক্তি ফিরে পাবেন। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি যতদ্রুত সম্ভব জেলা সংস্কারের কাজে হাত দিব।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের ব্যাপারে আমরা ঐকোমত হবো। রাষ্ট্রের কিছু কিছু সংস্কার খুবই প্রয়োজন। আমরা জনগণের কাছে এসেছি রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য আপনাদের কি কি পরামর্শ, আপনারা কি কি বলতে চান, সেটা শোনার জন্য, জানার জন্য। আমরা আমাদের বক্তব্য শোনাতে আসিনি। হয়তো আপনাদের কিছু প্রশ্নের উত্তর আমরা দিয়ে যাব।
নুসরাত তাবাসসুম জ্যোতির গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ডাংমড়কা বাগুয়ান গ্রামে। তারা বাবা আব্দুল হালিম (টম) উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া জেলা শাখার আয়োজনে এ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক, সহ-সমন্বয়ক, কুষ্টিয়ার বিভিন্ন ইউনিটের সমন্বয়ক, সহ সমন্বয়ক, সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
এর আগে খুলনা বিভাগীয় সফরের অংশ হিসেবে প্রথম দিন সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত ও আহত পরিবারের সাথে মতবিনিময় করেন সমন্বয়ক প্রতিনিধি দল। এরপর জেলার সমন্বয়কদের সাথে মতবিনিময় করেন তারা। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মতবিনিময় শেষে বিকালে কুষ্টিয়া পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন সমন্বয়ক প্রতিনিধিরা।
