ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

খাল দখল ও টানা বৃষ্টি 

ইউনেস্কো ঘোষিত চুনাখোলা মসজিদে পানি, নামাজ বন্ধ

আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২৫, ০৭:২৯ পিএম

টানা বৃষ্টির কারণে বাগেরহাটে পানিতে তলিয়ে গেছে ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ চুনাখোলা মসজিদ। এতে শত শত বছরের প্রাচীন এই স্থাপনাটি এখন ঝুঁকির মুখে রয়েছে।

গত শুক্রবার (১ আগস্ট) সদর উপজেলার চুনাখোলা গ্রামে মসজিদটি ঘুরে দেখা গেছে, এর চারপাশে থৈ থৈ পানি। ভেতরের মেঝেও পানিতে ডুবে আছে। মসজিদের মূল গেটের নিচে ছোট বাঁধ দেওয়া হলেও তা ভেদ করে পানি মেহরাব পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। পানি ঢুকে পড়ায় মসজিদে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

এছাড়া দেয়াল, মেঝে, মেহরাব ও টেরাকোটা অলংকরণে পানি লেগে কালো ফাঙ্গাস ধরেছে। মেঝে স্যাঁতসেঁতে হয়ে যাওয়ায় স্থাপনার স্থায়িত্ব নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, মসজিদের পাশের খালগুলো দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি বের হতে পারছে না। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। এবারের টানা বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াসিন বলেন, এবার অন্তত ৪-৫ বার মসজিদে পানি ঢুকেছে। এখন পুরো মেঝে পানির নিচে। টেরাকোটাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মসজিদে নামাজ আদায় করা যাচ্ছে না। আমরা দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা চাই।

খানজাহান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা আরিফুল ইসলাম আকুনজি বলেন, বাগেরহাটের প্রাচীন স্থাপনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে চুনাখোলা মসজিদ। মসজিদের ভেতর পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে গেছে। প্রাচীন ইট ও চুন-সুরকি দিয়ে নির্মিত স্থাপনাগুলোয় পানি ঢুকলে তা গঠনগতভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে স্থাপনার স্থায়িত্ব ঝুঁকির মুখে পড়ে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা আছে। ‘

খানজাহান (রহ.) মাজারের প্রধান খাদেম ফকির তারিকুল ইসলাম বলেন, মসজিদের পাশে মাছের ঘের তৈরি করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করা হয়েছে। এখন বৃষ্টি হলেই পুরো এলাকা পানিতে ডুবে যায়। এটি খুবই উদ্বেগজনক।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের খুলনা আঞ্চলিক পরিচালক লাভলী ইয়াসমিন বলেন,‘চুনাখোলা মসজিদ এবারই প্রথম পানিতে তলিয়ে গেছে। অতিরিক্ত বৃষ্টি ও খাল-বিল বন্ধ থাকায় এমনটা হয়েছে। আমরা স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছি।

উল্লেখ্য, চুনাখোলা মসজিদ ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত হয়। এটি খানজাহান আলী স্থাপত্য রীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। এক গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদের দেয়ালে কারুকাজখচিত টেরাকোটা এখনো দৃশ্যমান। 

NJ
আরও পড়ুন