কৃষিনির্ভর জেলা মেহেরপুর। একই জমিতে ৩-৪টি ফসল উৎপাদন করে থাকে এখানকার কৃষেকেরা। তবে চলতি মৌসুমে প্রকট হারে দেখা দিয়েছে সার সঙ্কট। গেল ৬ মাস ধরে এ অবস্থা থাকলেও মিলছে না সমাধান। ফলে সার সঙ্কটে বিপাকে পড়েছেন জেলার কৃষকেরা।
ইউরিয়া সার মিললেও চাহিদা মতো পাওয়া যাচ্ছে না টিএসপি ও এমওপি। মিললেও কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। ফলে বাড়ছে ফসলের উৎপাদন খরচ।
সার ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দের ৩ ভাগের একভাগ সার পাওয়া যাচ্ছে। তবে উল্টো সুর কৃষি বিভাগের। সারের কোন সংকট নেই বলে দাবি তাদের।
মেহেরপুরের সদর উপজেলার ঝাঁঝাঁ হরিরামপুরের কৃষক মাহফুজ বলেন, মাঠজুড়ে ধান, কাঁচা মরিচ, কলাসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ। এখানকার কৃষকেরা ব্যস্ত ফসলে সার ছিটাতে।

তবে তাদের অভিযোগ, চাহিদা অনুয়ায়ী জমিতে সার দিতে পারেছ না ডিলার, সাব ডিলার বা খুচরা দোকানে সার থাকলেও চড়া দামে কিনতে হচ্ছে।
টিএসপি ও এমওপির দাম বস্তাপ্রতি ২০০ থেকে ৫০০ টাকার বেশি। এতে বাড়ছে উৎপাদন খরচ। ফসলের ভালো ফলন হলেও বর্তমান বাজার দরে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।
মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালি গ্রামের কৃষক আবেদ আলী বলেন, ১০ বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছি। সারের সংকটের কারণে জমিতে ঠিকমত সার দিতে পারছি না। বাজরে চাহিদা মোতোবেক সার পাওয়া যাচ্ছে না। যেটুকু পাওয়া যাচ্ছে তা আবার বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে।

সার ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রয়োজনের তুলনায় ৩ ভাগের একভাগ বরাদ্দ পাচ্ছেন তারা। ফলে অন্য জেলা থেকে সার কিনে এনে অনেকই বিক্রি করছেন। এতে কিছুটা বেশি দামেই কৃষকদের কাছ সার বিক্রি করছেন।
মেহেরপুর বিসিআইসি সার ডিলার সমিতির সভাপতি হাফিজুর রহমান, বলেন আমরা প্রয়োজনের তুলনায় ৩ ভাগের একভাগ বরাদ্দ পাচ্ছি। ফলে চাষিদের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। তবে কিছু ব্যবসায়ী গোপনে অন্য জেলা থেকে সার ক্রয় করে নিয়ে এসে বেশি দামে বিক্রি করছে। প্রয়োজন মতো বরাদ্দ পেলে জেলায় সারের সংকট আর থাকবে না বলে দাবি করেন তিনি।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামসুল আলম বলছেন, জেলায় কোন সারের সঙ্কট নেই। সার বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ পেলে আইনগত সব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দাবি এই কৃষি কর্মকর্তার।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বছর ডিএপি ও টিএসপি সারের চাহিদা ধরা হয়েছে ৩১ হাজার ৬৬০ মেট্রিকটন। তবে চাহিদার তুলনায় কতটুক সার পেয়েছে, সে তথ্য দিতে নারাজ কৃষি বিভাগ।
