ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

১০ ঘন্টা পর পাবনার পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার

আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ০৫:২২ পিএম

‎রাজশাহীর বানেশ্বরে বিআরটিসি বাস শ্রমিক কর্তৃক মাই লাইন বাস শ্রমিকদের মারধরের প্রতিবাদে পাবনা থেকে সকল রুটে পরিবহন ধর্মঘট প্রায় ১০ ঘন্টা পর প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার ঘোষণা করেন পাবনা মোটর মালিক শ্রমিক ইউনিনসহ কয়েকটি সংগঠন। এর আগে ভোর ৫টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলার সব রুটে পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়।

‎পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক ফিরোজ খান ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভোর থেকেই সকল পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছিল। সন্ত্রাসীদের শাস্তির দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। সকালে পাবনার রাজপথে সকল শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এরপর জেলা প্রশাসক স্যার আমাদের সবাইকে ডেকেছিলেন। তিনি এসব সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাসে আমরা সকল ধরনের ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছি। 

‎তিনি আরো বলেন, বিকেল ৩টায় সড়কে সব পরিবহন চলাচল করছে। আমরা জেলা প্রশাসক স্যারের প্রতি আস্থা রেখেছি। তিনিই আমাদের শেষ ভরসা। এরপরও যদি আমরা বিচার না পাই, তাহলে আবারও আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। 

তিনি অভিযোগ করেন, সরকারি বিআরটিসি বাস সঠিক নিয়মে চালায় না। তারা লিজ দিয়ে চালায়। সড়কে ইচ্ছেমত চলাচল করে, কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না। আমরা বাস মালিকরা সঠিক নিয়মে রাস্তায় চলি। আমাদের নিয়ম যদি তাদের ভালো না লাগে, মাঝেমধ্যেই আমাদের শ্রমিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। এরপর যদি এমন ব্যবহার বা শ্রমিকদের মারধর করা হয়, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে যা হয় তাই করা হবে।

‎জানা গেছে, মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে দাশুড়িয়া মোড় থেকে মাই লাইন পরিবহনে যাত্রী তোলা নিয়ে বিআরটিসি বাসের শ্রমিকের সাথে  শ্রমিকের সঙ্গে মাই লাইনের শ্রমিকদের কথা কাটাকাটি হয়। এরপর নাটোর গিয়ে আবারও কথা কাটাকাটি হয়। এছাড়া রাজশাহীর বানেশ্বরে যাত্রী তোলা নিয়ে বিআরটিসি ও মাই লাইন বাসের শ্রমিকদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মাই লাইন বাস শ্রমিকদের মারধর করে বিআরটিসি বাস শ্রমিকরা।

‎এ ঘটনায় মোটর শ্রমিক ইউনিয়নকে জানালে বিষয়টি রাতে মিমাংসা করে দেওয়ার কথা বলেন মোটর শ্রমিক নেতারা। এ ঘটনায় রাত ৮টার দিকে মিমাংসা করতে বসেন মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন। এ সময় বিআরটিসি বাসের শ্রমিকরা লাঠিসোটা ও জিআই পাইপ দিয়ে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে ব্যাপক হামলা চালিয়ে শ্রমিকদের মারধর করে চলে যায়। এছাড়া কার্যালয় পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এরপর পাবনার বাস ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিবহন বন্ধ রাখা হয়। ভুক্তভোগী শ্রমিকরা দোষীদের বিচারের দাবিতে পাবনা শহরের শহীদ চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।

‎পাবনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের পাবনার শ্রমিকরা বিআরটিসি শ্রমিকদের দ্বারা মারধরের শিকার হবে। আবার শাহজাদপুর বাস শ্রমিকদের হাতে মার খাবে, এটা এখন নিত্যদিনের রুটিন হয়ে গেছে। পরিবহন সেক্টরে সরকারি নজরদারি দরকার। এমন রেষারেষি চলতে থাকলে একটি দুটি বাস মুখোমুখি সংঘর্ষ করে প্রতিশোধ নেবে হয়ত। বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হলে এর দায় কে নেবে? পাবনার কোন শ্রমিকের গায়ে হাত তোলা হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমরা স্থায়ী সমাধান দাবি করছি।

পাবনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, সকল শ্রমিক সংগঠনকে ডেকেছিলাম। কার্যকরী আলোচনা ও সমাধান হয়েছে। বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন সব সময় শ্রমিকদের পাশে আছে, সামনেও থাকবে।

NJ
আরও পড়ুন