নাটোরের লালপুরে দুয়ারিয়া ইউনিয়নের ধানাইদহপাড়ায় দীর্ঘদিন যাবত আনিসুর রহমান বাচ্চু নামে এক যুবলীগ নেতার অবৈধ ইটভাটা পরিচালিত হয়ে আসছে। আনিসুর রহমান বাচ্চু পরিচালিত ভাটাটির ‘বিএসবি’ নাম বদলে এখন চলছে ‘এমএসএস’ নামে। মো. অলিউল্লাহ নামে একজন ইটভাটাটি লিজ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভাটাটি একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ও পরিবেশ সংবেদনশীল স্থানে অবস্থিত। যেখানে ইটভাটা স্থাপন আইনত নিষিদ্ধ। আইন অনুসারে ইটভাটা পরিচালনার জন্যে প্রয়োজন বৈধ লাইসেন্স, পরিবেশ সুরক্ষার কঠোর নিয়ম-কানুন মানা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং জনজীবনে বিরূপ প্রভাব কমানো। কিন্তু এই ইটভাটা পুরোপুরি এসব নিয়ম কানুন উপেক্ষা করছে।
বর্তমানে এর কোনো বৈধ লাইসেন্স নেই এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আগে অন্তত ৪ বার অভিযান চালিয়ে ইটভাটাটি বন্ধ করে দেয়। তবুও মালিক পুনরায় অবৈধভাবে ভাটাটি চালু করেছে।
ইটভাটার পাশেই রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ ও মাদরাসা। যেখানে শত শত শিশু শিক্ষা লাভ করে। ইটভাটার সৃষ্ট ধোয়া ও ধূলিকণা তাদের শরীরের জন্যে মারাত্মক হুমকি। এছাড়াও আশেপাশে গাছপালা ও কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যা এলাকার প্রাকৃতিক ও কৃষিপ্রধান জীবিকার ভারসাম্য বিনষ্ট করছে।
সম্প্রতি, জেলা প্রশাসকের কাছে বিএসবি/এমএসএস নামের অবৈধ ইটভাটাটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করার জন্যে আবেদন করা হয়েছে। ভাটা বন্ধে পরিবেশে অধিদপ্তরে ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরও লিখিত আবেদন করা হয়েছে৷
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দুয়ারিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান বাচ্চু ও অলিউল্লাহ ভাটার নাম বদলে রাখেন এমএসএস। উপজেলার ধানাইদহপাড়ায় জনবসতি ও স্কুলের পাশে বিএসবি নামে ওই অবৈধ ভাটা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে কয়েক বছর আগে থেকে পরিচালনা করে আসছে তারা। এতে গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
ভাটায় জ্বালানি হিসেবে গাছ পোড়ানোয় উজার হচ্ছে গাছপালা। জমিতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। মাটি কাটার ফলে কমছে ফসলি জমি। অধিক ভার বহনকারী গাড়ি চলাচলের কারণে নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ রাস্তা। ফলে দুর্ভোগে পড়েছে গ্রামবাসী।
এসব ঘটনার জেরে গত বছর সেনাবাহিনী গিয়ে ভাটা বন্ধের নির্দেশ দিলেও ভাটা মালিক তা বন্ধ করেনি। সেনাবাহিনী চলে যাওয়ার পর তারা পুনরায় ভাটা চালু করে। পরিবেশ দূষণকারী এসব ইটভাটা ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়ার দাবি জানান গ্রামবাসী।

এ বিষয়ে বিএসবি ভাটার মালিক আনিসুর রহমান বাচ্চুর মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নাটোর পরিবেশ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করলে বলা হয়, আমরা অভিযোগ পেয়েছি, ভাটার কার্যক্রম বন্ধ রাখতে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তারপরও যদি বন্ধ না রাখে তাহলে আইনি ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুলহাস হোসেন সৌরভ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। আইনি বিধি মোতাবেক লালপুরে যতগুলো অবৈধ ইটভাটা রয়েছে সবগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নাইক্ষ্যংছড়িতে পাহাড় কেটে গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা