উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতে কুড়িগ্রামের প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে জেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
যদিও বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত জেলার সব নদীর পানি এখনো বিপদসীমার নিচে রয়েছে। তবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের মাঝে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস জানায়-
ধরলা নদীর কুড়িগ্রাম পয়েন্ট: বিপদসীমা ২৬.০৫ মিটার। আজ সকাল ৬টায় সেখানে পানি ছিল ২৫.১৩ মিটার, সকাল ৯টায় বেড়ে দাঁড়ায় ২৫.১৯ মিটারে। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২০.০ মিমি।
দুধকুমার নদীর পাটেশ্বরী পয়েন্ট: বিপদসীমা ২৯.৬০ মিটার। সকাল ৬টায় পানি ২৯.১০ মিটার থেকে সামান্য কমে সকাল ৯টায় দাঁড়ায় ২৯.০৮ মিটার। বৃষ্টিপাত হয়েছে ৮৯.০ মিমি।
ব্রহ্মপুত্র নদীর নুনখাওয়া পয়েন্ট: বিপদসীমা ২৬.০৫ মিটার। সকাল ৬টায় পানি ছিল ২৪.৬৯ মিটার, সকাল ৯টায় বেড়ে হয় ২৪.৭১ মিটার।
ব্রহ্মপুত্র নদীর হাতিয়া পয়েন্ট: বিপদসীমা ২৪.৪০ মিটার। সকাল ৬টায় পানি ২৩.০৭ মিটার থেকে বেড়ে সকাল ৯টায় দাঁড়ায় ২৩.১০ মিটার।
ব্রহ্মপুত্র নদীর চিলমারী পয়েন্ট: বিপদসীমা ২৩.২৫ মিটার। সকাল ৬টায় পানি ছিল ২২.১৬ মিটার, সকাল ৯টায় হয় ২২.১৭ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ৬৩.০ মিমি।
তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্ট: বিপদসীমা ২৯.৩১ মিটার। সকাল ৬টায় পানি ছিল ২৮.৯৫ মিটার, সকাল ৯টায় বেড়ে হয় ২৮.৯৭ মিটার। বৃষ্টিপাত হয়েছে ৩৮.০ মিমি।

স্থানীয়রা জানান, নদীর পানি বাড়তে শুরু করায় চর ও নিম্নাঞ্চলের অনেক পরিবার ইতোমধ্যে গবাদি পশু ও ঘরের আসবাবপত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। একইসঙ্গে তীব্র স্রোতের কারণে নদীভাঙনও দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরবর্তী কয়েকটি এলাকায় বসতবাড়ি ও কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
জেলার চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষদের জন্য এ সময়টি চরম দুশ্চিন্তার। বন্যার পাশাপাশি নদীভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের।
অনেকে বলছেন, যদি পানি বৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে কয়েকদিনের মধ্যেই বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে, যা তাদের জীবন-জীবিকায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুড়িগ্রাম উপ-পরিচালক মো. রাকিবুল হাসান বলেন, উজানের ঢল ও বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ২/৩ দিন পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এতে রৌমারী, রাজীবপুর, চিলমারী, উলিপুর ও সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। স্থানীয়দের সতর্ক অবস্থানে থাকতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
