পরকীয়ার জেরে খাবারে বিষ মিশিয়ে স্বামীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী মৌসুমী আক্তারসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে। ঘটনার ৮ মাস পর পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য স্বামী খামিরুল ইসলামের মরদেহ উত্তোলন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেড়া ইউনিয়নের রায়পাড়া গ্রামে।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদুর রহমানের উপস্থিতিতে ওই এলাকার কবরস্থান থেকে খামিরুল ইসলামের মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
পরে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ডা. মাহবুবুর রহমান সুমন, থানা পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যান খামিরুল ইসলাম। পরে ৩ ফেব্রুয়ারি নিহতের পিতা তবিবর রহমান বাদী হয়ে খাবারে বিষ প্রয়োগ করে খামিরুলকে হত্যার অভিযোগে পঞ্চগড় আমলী আদালত-১ এ মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
এ ঘটনায় খামিরুলের স্ত্রী মৌসুমী আক্তার, তেঁতুলিয়ার দেবনগর ইউনিয়নের গুয়াবাড়ি এলাকার মৃত বোয়ালু মুন্সির ছেলে আব্দুর রউফ ও তার স্ত্রী ইতি আক্তারকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে খামিরুলের বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন তেঁতুলিয়ার দেবনগরের আব্দুর রউফ। একপর্যায়ে খামিরুলের স্ত্রী মৌসুমীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন রউফ। পরে বিয়ের পরিকল্পনা করতে গিয়ে খামিরুলকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। এতে সহযোগিতা করে রউফের স্ত্রী ইতি আক্তার।
গত ১৪ জানুয়ারি আব্দুর রউফ ও ইতি আক্তার খামিরুলের বাড়িতে বেড়াতে যান। সেদিন রাতে খামিরুলকে রুটি খেতে দেওয়া হয়। খাবার খেয়েই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন খামিরুল। পরে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে পর ১৬ জানুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনার পরেই নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী দেলওয়ার হোসেন রাসেল সাংবাদিকদের জানান, অভিযুক্তদের একটি কল রেকর্ড থেকে পরকীয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। কথোপকথনের মাধ্যমে জানা গেছে, খাবারে বিষ প্রয়োগ করেই খামিরুলকে হত্যা করা হয়েছে। এরপরই আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।
সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদুর রহমান বলেন, আদালতের নির্দেশে মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে সিআরপিসি ১৭৬ ধারা অনুযায়ী কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
কিডনি রোগে ভুগছেন গার্মেন্টস শ্রমিক কামরুল, বাঁচার আকুতি