ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি কমে দুপুর ১২টায় বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরে বিকাল ৩টায় পানি কমে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
এদিকে তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায় অবস্থিত দেশের সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।
তিস্তার চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা জানিয়েছেন, টানা কয়েক দিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। এতে তিস্তার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়। আতঙ্কিত হয়ে পড়ে নদী সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা।
তিস্তা ব্যারেজ কন্ট্রোল রুম ইনচার্জ নুরুল ইসলাম জানান, সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় তিস্তার পানি ব্যারেজ পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বন্যা নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট খুলে রাখা হয়েছে। সতর্কাবস্থায় থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
তিস্তা নদী সংলগ্ন গড্ডিমারী গ্রামের বাসিন্দা কদম আলী বলেন, প্রচুর পানি আসছে ভারতের উজান থেকে। ইতোমধ্যে নিচু এলাকায় পানি ঢুকে গেছে। এভাবে পানি আরও বাড়লে আমাদের গ্রামটি পানিবন্দি হয়ে পড়বে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, সোমবার সকাল থেকে পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৪৪টি জল কপাট খোলা রাখা হয়েছে।
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবরধন গ্রামের সফি বলেন, উজানের ঢলে পানি বাড়ছে। চরাঞ্চলের কিছু বাড়ি ইতোমধ্যে পানিবন্দি। যেভাবে পানি বাড়ছে, তাতে বড় বন্যার আশঙ্কা করছি। এ বছর এখনো বড় কোনো বন্যা হয়নি।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, ‘বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ তথ্য মতে আগামী তিন দিন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি কখনো উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, নদী তীরবর্তী এলাকার খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। বন্যা দেখা দিলে তা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
