ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ফুঁফিয়ে কাঁদছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তুরিন আফরোজ। এসময় তাকে সান্ত্বনা দেন সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক আইজিপি শহিদুল হক ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তানভীর হাসান সৈকত।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের হত্যাচেষ্টা মামলায় বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয় তাকে। হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে সকাল ৯ টা ৫৫ মিনিটে তাকে আদালতে তোলা হয়।
এসময় প্রথমে তাকে হাস্যোজ্জ্বল দেখা গেলেও কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি ফুঁপিয়ে কাঁদছিলেন। তখন ইনু, সাবেক আইজিপি শহিদুল হক ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা তানভীর হাসান সৈকত তাকে সান্ত্বনা দেন। পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানি শুরু হলে বিচারকের উদ্দেশ্যে তার আইনজীবী বলেন, তুরিন আফরোজকে নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি কিছু কথা বলবেন।
পরে বিচারকের অনুমতি নিয়ে তিনি বলেন, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি ন্যায়বিচার চাই। কোনো কালে আমার রাজনৈতিক পদ পদবি ছিল না। আমি শুধুমাত্র পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছি। আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। আমি হাঁটতে পারি না।
পরে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, যা বলছেন তা সত্য না। উনি মিথ্যা কথা বলে ঘটনা অন্যদিকে ঘুরানোর চেষ্টা করছে। আদালতে প্যানিক সৃষ্টি করছে। তখন তুরিন নিজের পায়ে নির্যাতনের চিহ্ন বিচারককে দেখান। শুনানি শেষে তাকে উত্তরা পশ্চিম থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রহমানের আদালতের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে পুলিশ পাহারায় তাকে হাজতখানায় নেওয়া হয়। এ সময় তাকে হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায়। তবে কোনো কথা বলেননি তিনি।
এর আগে, গত ৭ এপ্রিল রাতে উত্তরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আব্দুল জব্বার নামে এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ৮ এপ্রিল তার চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ১২ এপ্রিল তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ একসময় মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) দাপুটে প্রসিকিউটর ছিলেন। ২০১০ সালে গঠিত এ ট্রাইব্যুনালে তিনি প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পান ২০১৩ সালে। পরবর্তীকালে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা গোলাম আযমের মামলাসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু মামলা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আলোচনায় আসেন এই আইনজীবী। পরবর্তীতে অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী মোহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে দেখা করার অভিযোগে তাকে ট্রাইব্যুনাল থেকে অপসারণ করা হয়েছিল। তিনি ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন: মামলায় গ্রেপ্তারে অনুমতির সিদ্ধান্ত স্থগিত
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা বাতিল