বাগেরহাটের ৪টি সংসদীয় আসন বহালের হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে আবেদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) এ বিষয়ে দুপুরে চেম্বার আদালতে আবেদন করেছে ইসি।
সোমবার (১০ নভেম্বর) বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি আসন করে নির্বাচন কমিশনের গেজেট অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন বহালে নির্দেশ দেন আদালত।
এদিকে আজ আদালতের রায় অনুযায়ী বাগেরহাটের ৪টি আসন বহাল রাখার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানান সেখানকার স্থানীয় রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতারা।
সকালে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সাথে সাক্ষাৎ করে এ কথা বলেন তারা।
এ সময় বাগেরহাটের ৪ আসনের বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ হাইকোর্টের রায়কে ন্যায় বিচার উল্লেখ করে স্বাগত জানান এবং সিইসিকে বিষয়টি অবগত করেন।
তারা বলেন, রায়ের কপি এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে না আসলেও পরবর্তীতে ইসির পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে যেন আপিল না করা হয়, এ বিষয়ে ইসিকে অনুরোধ জানাতে এখানে আসা হয়েছে।
এসময় সিইসির সাথে বিষয়টি নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলেও দাবি করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান দীপুসহ অনেকে।
এর আগে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশের অন্তত ৩৯টি আসনের সীমানায় ছোট বড় পরিবর্তন আনে ইসি।
এতে গাজীপুরে একটি আসন বেড়ে বাগেরহাটে একটি আসন বাদ যায়। গতকালই সীমানা পুননির্ধারণের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। রায়ে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল থাকাসহ গাজীপুরে একটি আসন কমানোর নির্দেশ দেয়া হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনে নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তারা গড়ে তোলে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি এবং হরতাল-অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেন।
কিন্তু নির্বাচন কমিশন গত ৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে। এতে চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে বাগেরহাটকে তিন আসনে ভাগ করা হয়। আগের প্রস্তাবের তুলনায় শুধু সীমানা পরিবর্তন করা হয়। এর পর থেকেই সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি আসন কমানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হরতাল, অবরোধ, অবস্থান, বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, ইসির আসন পুনর্বিন্যাস গণমানুষের দাবিকে উপেক্ষা করেছে। চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী, বাগেরহাট সদর, চিতলমারী ও মোল্লাহাট নিয়ে বাগেরহাট-১; ফকিরহাট, রামপাল ও মোংলা নিয়ে বাগেরহাট-২ এবং কচুয়া, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা নিয়ে বাগেরহাট-৩ গঠিত হয়েছে।
১৯৬৯ সাল থেকে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসনে নির্বাচন হয়ে আসছিল। সে অনুযায়ী বাগেরহাট-১ ছিল চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট; বাগেরহাট-২ ছিল বাগেরহাট সদর-কচুয়া; বাগেরহাট-৩ ছিল রামপাল-মোংলা এবং বাগেরহাট-৪ ছিল মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা।
ইসির গেজেট অবৈধ, বাগেরহাটের চারটি আসনই বহাল: হাইকোর্ট
তত্ত্বাবধায়ক ফেরাতে আপিলের রায় ২০ নভেম্বর
আবু সাঈদ হত্যা: ১১তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ