বিরোধী দলের নেতা থাকাকালে, শেখ হাসিনার কান্নার প্রস্তুতি সম্পর্কে মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান রেন্টুর লেখা ‘আমার ফাঁসি চাই’ বইয়ে উল্লেখ রয়েছে, শেখ হাসিনা একদিন বলেছিলেন, আমার রুমালে গ্লিসারিন লাগিয়ে দাও, যাতে লাশ দেখলে রুমাল ধরতেই চোখে পানি চলে আসে।
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে টানা পাঁচদিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছিল প্রসিকিউশন। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ মামলার বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের বর্ণনা দিতে গিয়ে যুক্তিতর্কের পঞ্চম দিনে এ উদ্ধৃতি উপস্থাপন করেন।
বইটির ৭১ পৃষ্ঠায় শেখ হাসিনা এবং মোহাম্মদ হানিফ সম্পর্কিত এক ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে শেখ হাসিনা বলছিলেন, এত লোক আসছে, এত ফুল মালা আসছে, কিন্তু হানিফ কোথায়? একবারও ফোন করেনি, কী ব্যাপার?
একটি ঘটনা বর্ণনায় বলা হয়, লালবাগের বিএনপি কমিশনার প্রার্থী আজিজ সাতজনকে খুন করলে, শেখ হাসিনা তাদের লাশ দেখতে যাওয়ার জন্য কান্নার অভিনয় নিয়ে কৌশল তৈরি করেন। তিনি বলেছিলেন, রুমালে গ্লিসারিন লাগিয়ে দাও, যেন লাশ দেখার সঙ্গেই চোখে পানি চলে আসে। এর উদ্দেশ্য ছিল, ফটো সাংবাদিকদের সামনে কান্না করে ছবি তোলা, যাতে মিডিয়াতে তার ভাবমূর্তি তৈরি হয়।
রুমালে গ্লিসারিন লাগানোর পর, হাসিনা মর্গে গিয়ে সাতটি লাশ দেখে রুমাল দিয়ে চোখ মুছেন। সাংবাদিকরা ছবি তোলা শেষ করে গাড়িতে উঠে হাসিনা গলা নামিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, ফটো সাংবাদিক এখন আর নেই তো? পরে গাড়ি চলতে শুরু করলে, তিনি রুমাল নামিয়ে দেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বাড়িতে ফিরে গিয়ে বলেন, আজ আমি বেশি খাওয়াদাওয়া করব, লাশ দেখে এসেছি। সেদিন তিনি আসলেই অন্যান্য দিনের চেয়ে অস্বাভাবিক রকম বেশি খাবার খেয়েছিলেন।
আজ শেখ হাসিনার মামলার রায় ট্রাইব্যুনালে ঘোষণা হবে। এতে প্রসিকিউশন শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামালের সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেছে, যদিও রাজসাক্ষী হওয়ায় আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন সম্পর্কে ট্রাইব্যুনাল সিদ্ধান্ত নেবে।
ট্রাইব্যুনালে ঢুকলেন সাবেক আইজিপি মামুন