জাল কাগজপত্র তৈরি করে ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অগ্রণী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)। অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা জালিয়াতির মাধ্যমে অগ্রণী ব্যাংকের গোপালগঞ্জ পৌর সুপার মার্কেট শাখা থেকে ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বুধবার (২৯ মে) দুদকের গোপালগঞ্জ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামিরা হলেন গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এমএলএসএস মো. রেজাউল করিম, ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুর রহমান, প্রিন্সিপাল অফিসার মো. মুজাহিদুল ইসলাম, বাস শ্রমিক মো. আরমান মোল্যা, পারভীন আক্তার, পাপিয়া বেগম, ও আইনজীবী সৌরেন্দ্র নাথ মন্ডল।
মামলার এজাহারে সূত্রে জানা যায়,আসামী মো. রেজাউল করিম মেসার্স রেজাউল ট্রেডার্স এর মালিক। তিনি ইট, বালু ও মাটির ব্যবসা করেন।ব্যবসার উদ্দেশ্যে ২০১২ সালে অগ্রণী ব্যাংকের গোপালগঞ্জ পৌর সুপার মার্কেট শাখায় ১০ লাখ টাকার সিসি হাইপো ঋণের জন্য আবেদন করেন। তখন অগ্রণী ব্যাংকের তৎকালীন লোন অফিসার আসামী মো. মুজাহিদুল ইসলাম ও শাখা ব্যবস্থাপক আসামী মো. শফিকুর রহমান গ্রাহকের অনুকূলে ৮ লাখ সিসি হাইপো ঋণ মঞ্জুরের সুপারিশ করেন। অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির আঞ্চলিক কার্যালয় গোপালগঞ্জে ঋণ প্রস্তাব প্রেরণ করা হলে ৭ লাখ টাকা ঋণ পায় রেজাউল করিম। ঋণের অনুমোদনের বিপরীতে রেজাউল গোপালগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন ১০৬ নং ঘোষেরচর মৌজার আর, এস ৬৮ নং, এস, এ ৮২ নং খতিয়ানের আর, এস ও এস, এ ৩৬৭৯ নং দাগের ৭ শতাংশ জমি মর্টগেজ রাখেন। কিন্তু মেসার্স রেজাউল ট্রেডার্স এর নামীয় ঋণটি ২০১৩ সালে ২০ লাখ টাকায় বৃদ্ধি করার সময় ভিন্ন তিনটি তপসিলের মোট ২৮.৪৮ শতাংশ জমি মর্টগেজ রাখা হয়। মর্টগেজকৃত ভূমির মধ্যে (১) ঘোষেরচর মৌজার আর, এস ৬৮ নং, এস, এ ৮২ নং খতিয়ানের আর, এস ও এস, এ ৩৬৭৯ নং দাগের ৭ শতাংশ জমি আসামি রেজাউল করিম তার বোন পারভীন আক্তারের কাছ থেকে হেবামূলে প্রাপ্ত দেখিয়ে ভুয়া নামজারী তৈরি করে মর্টগেজ সম্পাদন করেন।
এছাড়াও ঘোষেরচর মৌজার আর, এস ৭০ নং, এস, এ ৮৫নং খতিয়ানের আর, এস ও এস, এ ৪৫৫৫ নং দাগের ১১.২৩ শতাংশ জমির ভুয়া নামজারী সৃজনপূর্বক আসামী মো. রেজাউল করিম ও আসামী মো. আরমান মোল্যা মর্টগেজ সম্পাদন করেন। ঘোষেরচর মৌজার সি,এস ৪১ নং, আর,এস ৬৮ নং, খতিয়ানে সি,এস ৯৭৮ নং, আর,এস ও এস, এ ৩৬৭৯ নং দাগের ১০.২৫ শতাংশ বিক্রিত জমি আসামী পারভীন আক্তার মর্টগেজ প্রদান করেন। আসামী পাপিয়া বেগম ওই ঋণের গ্যারান্টর এবং আসামী সৌরেন্দ্র নাথ মন্ডল অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি, পৌর সুপার মার্কেট শাখা, গোপালগঞ্জের প্যানেলভূক্ত আইনজীবী হিসেবে ওই ঋণ জালিয়াতির সাথে জড়িত।
আসামিদের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎ ও ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে ঋণ নেওয়ার অভিযোগে দন্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধে করায় মামলা দায়ের করেছে দুদক।
