এমপির লোক পরিচয়ে চুয়েটে শিক্ষার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার

আপডেট : ১৪ মে ২০২৪, ০৬:০৯ এএম

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর দুই শিক্ষার্থীর সাথে দুর্ব্যবহার ও হুমকির অভিযোগ উঠেছে এনকে ট্রেডার্স নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের এক প্রতিনিধির বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম নাঈম খান।

সোমবার (১৩ মে) দুপুর আড়াইটা নাগাত চুয়েটের কেন্দ্রীয় মসজিদের বিপরীত পার্শ্বে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র সংলগ্ন স্থানে এ ঘটনা ঘটে। উপকেন্দ্রের গা ঘেষে বেশ জায়গা জুড়ে অনেক গাছগাছালী কেটে কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। এ অবস্থায় কাজের অসঙ্গতি ও বিপুল পরিমাণ গাছ কাটার ছবি তুলতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। 

ভুক্তভোগী চুয়েটের তৃতীয় বর্ষের (২০-ব্যাচ) স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী শোভন লাল সরকার জানান, সাবস্টেশনের পাশের জায়গায় গাছ কাটা হচ্ছে দেখে তিনি ছবি তুলতে যায়। হঠাৎ দূর থেকে কয়েকজন তেড়ে আসে তার হাতে থাকা ফোন কেড়ে নেওয়ার জন্য । এ সময় নাঈম খান নামের ঐ প্রতিনিধিসহ তার বাকি সহযোগীরা শোভনের সাথে মারমুখী আচরণ করে।

এসময় ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইটিই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিয়াম এঘটনার প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসলে তার জামার কলার ধরে হুমকি দেয়া হয়। এসময় নাঈম খান বলেন, আমাদেরকে টিচার ফিচার ভাইবো না, এমপির লোক আমরা, ভিসিও কিছু করতে পারবো না আমাদের। এছাড়াও তিনি বরেন ক্যাম্পাসের ভিতরে এই জায়গাটিকে তার নিজের প্রপার্টি। 

পরবর্তীতে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ঠিকাদারকে উপযুক্ত শাস্তির আওতায় এনে চুয়েটে তার কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা। 

এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করলে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালকগণ সেখানে উপস্থিত হয়ে নাঈম খানকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেন।  এসময় নাঈম খান নিজের দোষ স্বীকার করে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। 

এ ব্যাপারে চুয়েটের উপাচার্য ড. রফিকুল আলম বলেন, আমি ওই কন্ট্রাক্টরকে ডেকেছি। এ ধরনের আচরণ করলে সে কখনোই ওই সাইটে থাকতে পারবে না। তাকে ক্যাম্পাসে রেস্ট্রিকশন করে দেয়া হবে। এটা কোনো অবস্থাতেই মেনে নেয়া যায় না। 

চুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের ২০ আবর্তের শিক্ষার্থী রিদওয়ান মাহমুদ বলেন, চুয়েটের ছাত্র হয়ে নিজ ক্যাম্পাসে একজন বহিরাগত এই রকম ব্যবহার কোনো ভাবেই কাম্য নয়। চুয়েট প্রশাসনের কাছ থেকে আশা করি এইসব নির্মাণের কাজে নিয়োজিত সকল লোকদের তাদের অবস্থান এবং ছাত্রদের সাথে ব্যবহারের বিষয়টি পরিষ্কার করে দিবে।

এ সম্পর্কে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক ড. রেজাউল করিম জানান, ছাত্রদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাটি পর্যালোচনা করা হবে। ভবিষ্যতে এ ধরণের কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য ব্যাবস্থা নেয়া হবে। 

উল্লেখ্য, অভিযুক্ত নাঈম ইয়াকুব অ্যান্ড ব্রাদারস এনকে ট্রেডার্স জয়েন্ট ভেঞ্চার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করেন। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল রিসার্চ ল্যাবের কাজে নিয়োজিত আছে৷

AS