ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবর্ষণকারীরা পালিয়েছে কিনা, তা এখনও নিশ্চিত নয় প্রশাসন। তবে এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ফিলিপ স্নালকে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এছাড়া সন্দেহভাজন হিসেবে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় ময়মনসিংহ বিজিবি সেক্টর সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সেক্টর কমান্ডার সরকার মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় ২ দিন পর মামলাসেক্টর কমান্ডার বলেন, হাদিকে গুলি করার ঘটনায় জড়িত অপরাধীরা ময়মনসিংহ সীমান্ত ব্যবহার করে ভারতে পালিয়ে গেছে কিনা, তা এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। পালিয়ে গেলে ফিলিপ স্নাল ভালো বলতে পারবেন। তাকে আটক করা গেলে পুরো বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। কীভাবে যোগাযোগ হয়েছে, কত টাকা লেনদেন হয়েছে, ওপারে কাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে, আদৌ পালিয়েছে কিনা- তা জানা যাবে। ফিলিপ স্নালকে আটকের জন্য বিজিবি সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে।
ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টা মামলা ডিবিতে হস্তান্তরলিখিত বক্তব্যে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের পরই ময়মনসিংহ অঞ্চলে সব্বোর্চ্চ সর্তক অবস্থানে যায় বিজিবি। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে বিজিবি সদর দপ্তরের নির্দেশনায় ৩৯ বিজিবি পাচারের সম্ভাব্য রুটগুলো চিহ্নিত করে সীমান্তের অধিকাংশ স্থানে টহল ও চেকপোস্ট বসানো হয়। শনিবার পুলিশ ও বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়।
এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরের পথে হাদিঢাকা থেকে আসা পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বিজিবি ময়মনসিংহ সেক্টর কমান্ডারের নিয়মিত যোগাযোগ ও অভিযান নিয়ে আলোচনা শেষে শেরপুরের নালিতাবাড়ি ও ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের দুইটি স্থানে একসঙ্গে অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়। সন্দেহভাজন হিসেবে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে অবস্থানরত ফিলিপ স্নালকে আটকের পরিকল্পনা করা হয়। পুলিশের আরেকটি দল হালুয়াঘাট এলাকায় অভিযানের পরিকল্পনা করে। এ ব্যাপারে সোর্স ও অন্যান্য বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করেছে বিজিবি।
অপরদিকে বিজিবির নেতৃত্বে এবং ঢাকা থেকে আসা ও হালুয়াঘাট থানার পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে নালিতাবাড়ীর বারোমারি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।
হাদির সঙ্গে সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন যারাকিন্তু ফিলিপ স্নালকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী ডেলটা চিরান, শ্বশুড় ইয়ারসন রংডি এবং মানবপাচারকারী লুইস লেংমিঞ্জাকে আটক করে বারোমারী বিওপিতে আনা হয়। সেখানে বিজিবি, পুলিশ ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই তিনজনকে পরে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। জব্দ করা হয়েছে ফিলিপ স্নালের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও৷
বিজিবি জানায়, আজ সোমবার ভোরে ফিলিপ স্নালের নিকট আত্মীয় বেঞ্জামিন রিচান (৩০) নামের এক যুবককে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে। তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মানবপাচারে জড়িত চক্র গুলোর কাছ থেকে ফিলিপের সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে তথ্য পাওয়ায় তাঁকে খোঁজ করা হচ্ছে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
