ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে এবার ইতিহাস গড়েছেন এক দম্পতি। প্রথমবারের মতো স্বামী ও স্ত্রী একসঙ্গে নির্বাচিত হয়েছেন ডাকসু সদস্যপদে। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
এই বিজয় হিজাবি-নন হিজাবি সবার: ফাতেমা তাসনিমবাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ থেকে অংশ নিয়ে রায়হান উদ্দিন এবং উম্মে সালমা দুজনেই জয়ী হয়েছেন। রায়হান কেন্দ্রীয় সদস্য (CMS) পদে এবং সালমা কমন রুম ও রিডিং রুম সম্পাদক (CRR) পদে নির্বাচিত হন।
ঘোষিত ফলাফলে ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের ভিপি প্রার্থী মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম) ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী উমামা ফাতেমা পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট পেয়েছেন। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৮৩ ভোট পেয়েছেন।
এই জয় সব শিক্ষার্থীর সম্মিলিত জয়: ভিপি সাদিকএ ছাড়া ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে জিএস পদে এস এম ফরহাদ ও এজিএস পদে মহিউদ্দীন খান জয়ী হয়েছেন। একই প্যানেল থেকে কেন্দ্রীয় সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন রায়হান উদ্দিন। আর কমন রুম ও রিডিং রুম সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন তার স্ত্রী উম্মে সালমা।
রায়হান উদ্দিন বলেন, সব মিলিয়ে আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়েছি, কথা বলেছি। তারা আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন, আমরা সেই আস্থার মূল্য দিতে কাজ করে যেতে চাই।
উম্মে সালমা বলেন, শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করাই হবে আমার প্রধান কাজ। তাদের কল্যাণে আমরা সত্যিই কিছু করতে চাই।
আমানতের খেয়ানত করা হবে না: জিএস ফরহাদরায়হান উদ্দিন ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী। উম্মে সালমাও একই বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। একই বিভাগ থেকে পড়াশোনা করা এই দম্পতি এবার ডাকসুর ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ৮টি কেন্দ্রের ৮১০টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে গঠিত হয় নতুন ডাকসু পরিষদ।
রায়হান-সালমা দম্পতির এই জয় শুধুমাত্র ব্যতিক্রমী ঘটনা নয়, এটি বার্তা দেয় যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনীতি এবং পারিবারিক সম্পর্ক এই দুইকে সুসংগতভাবে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। একই সঙ্গে এটি নারী নেতৃত্বের অংশগ্রহণ এবং স্বচ্ছ রাজনীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্তও।
