ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ডিএন ডিগ্রি কলেজে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) বিএ ও বিএসএস শেষ বর্ষের পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষকরা দাঁড়িয়ে থেকে প্রকাশ্যে নকল করতে সহায়তা করেছেন এমন অভিযোগ অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ডিএন ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ ও বিএসএস শেষ বর্ষের এক পরীক্ষায় এমন অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কারও সামনে বইয়ের ছেঁড়া পৃষ্ঠা, কারও সামনে পুরো বই খোলা রাখা হয়েছে। সেখান থেকে দেখে পরীক্ষার্থীরা উত্তরপত্রে লিখছেন।
সকাল ১১টার দিকে পীরগঞ্জ উপজেলার ডিএন ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষা চলছে। মূল ফটকে লেখা ‘নকলমুক্ত পরীক্ষা কেন্দ্র’, অথচ ভেতরে চলছে প্রকাশ্যে নকল। এসব নকল সরবরাহ করছেন খোদ দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরাই। পরীক্ষার্থীরা খোলাখুলিভাবে বইয়ের পাতা বা পুরো বই বেঞ্চের ওপর রেখে দেখে দেখে উত্তর লিখছেন। এমনকি কোথাও দেখা গেছে, একজনের সামনে থাকা বই দেখে কয়েকজন পরীক্ষার্থী উত্তর লিখছেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা তা প্রতিরোধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
পরীক্ষা কেন্দ্রে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেখে পরিদর্শনের দায়িত্বে থাকা কয়েকজন শিক্ষক এগিয়ে আসেন। এ সময় কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ গোপাল চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং কেন্দ্র তালাবদ্ধ করার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, আমার কেন্দ্রে আমি যা খুশি তাই করব। আপনাদের এখানে আসতে কে অনুমতি দিয়েছে?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, যাদের অন্য কোনো উপায় থাকে না, তারাই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কোর্সে ভর্তি হয়। তারা মূলত সনদের জন্য পড়ে, শিক্ষা অর্জন তাদের লক্ষ্য নয়। এজন্য কিছুটা ছাড় দিতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা সুযোগ-সুবিধা দেয়ার জন্য প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। এছাড়াও প্রতিটি পরীক্ষায় আলাদাভাবে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি) মেহেনাজ ফেরদৌস বলেন, নকলের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে পরীক্ষায় যদি কেউ নকল করে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে এসব পরীক্ষা শুরু হয়। এ বছর এই কেন্দ্রে প্রায় ৩১৫ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে।
