ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে তরুণ প্রজন্মের সামনে লোক-গ্রামের হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি তুলে ধরতে প্রথমবারের মতো অগ্রহায়ণের শুরুতে উদযাপিত হয়েছে আদি নববর্ষ উৎসব।
চিত্রশিল্পীদের রংতুলির আঁচড়ে রোববার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় শুরু হয় এ উৎসব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) এবং ‘বিপ্লবী সাংস্কৃতিক ঐক্য’র যৌথ উদ্যোগে দিনব্যাপী এ চার পর্বের উৎসব সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে দেশের বিশিষ্ট চিত্রশিল্পীদের পাশাপাশি চারুকলার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে জুলাই ও নবান্ন থিমে ছবি আঁকা হয়।
দুপুর সাড়ে ১২টায় চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয় শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রায় তিনটি মোটিফ স্থান পায়। এর মধ্যে জুলাই নিয়ে একটি, একটি জেলে জীবন নিয়ে এবং কৃষি জীবন নিয়ে একটি মোটিফ দেখা যায়। এছাড়াও পালকি, কৃষিকাজে ব্যস্ত এক নারী এবং জাল ছোড়া অবস্থায় একজন জেলের মোটিফ রাখা হয়। পাশাপাশি ধানের কুলা, গামছা-কাস্তে হাতে কৃষকসহ একাধিক উপাদান এ শোভাযাত্রায় দেখা যায়। এদিকে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চারুকলার বকুলতলায় চলে আবৃত্তি, নাচ, গান ও জাদু পরিবেশনা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম।
তিনি বলেন, আজকের দিনটি বেশি স্পেশাল। কারণ আগামীকাল (সোমবার) খুনি হাসিনার রায় হবে। সেই রায়ের আগে আজ আমরা চারুকলায় আদি নববর্ষ পালন করছি। সারা দেশের মানুষ অনেক আনন্দিত যে ফ্যাসিস্ট হাসিনা গত ষোলো বছরে গুম, খুন, আয়নাঘর, শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন থেকে শুরু করে সর্বশেষ জুলাই বিপ্লবে আমাদের চল্লিশ হাজার ভাইবোনদের গাজী করেছে, আমাদের দুই হাজার ভাইবোনদের শহীদ করেছে, সেই খুনি হাসিনার রায় হবে এবং সেটি দেশব্যাপী উদযাপন করব আমরা।
তিনি আরও বলেন, খুনি হাসিনা ও দোসরদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক বিপ্লব করতে হবে। এই ফ্যাসিস্টরাই বাংলাদেশের মতো সম্ভাবনাময় সুজলা, সুফলা, শস্য, শ্যামলা রাষ্ট্রকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। গত ষোলো বছরে খুনি হাসিনার অবৈধ শাসনকে বৈধতা দিয়েছিল কিছু কালচারাল ফ্যাসিস্ট। এই আয়োজনের মাধ্যমে এই অঞ্চলের মাটি ও মানুষের সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তুলেছি। এর সঙ্গে এই আয়োজনে আমরা ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে আমাদের গান, কবিতা আবৃত্তি, সংস্কৃতি চর্চা, কথা নিয়ে এসেছি।
ডাকসু ভিপি বলেন, আমাদের বাংলাদেশ কত সুন্দর। সুজলা, সুফলা, শস্য, শ্যামলা। কিন্তু দীর্ঘ চুয়ান্ন বছর আমরা আমাদের সম্ভাবনাময় বাংলাদেশকে কাজে লাগাতে পারিনি লিডারশিপের ব্যর্থতার কারণে। আমাদের এই বাংলাদেশকে যদি সারা বিশ্বে নেতৃত্বে নিতে চাই এবং শহীদদের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাই তাহলে আমাদের নেতৃত্বের আমূল পরিবর্তন দরকার। প্রত্যেকটি জায়গায় যে সিস্টেম লসগুলো আছে, সিন্ডিকেটগুলো আছে সেগুলো ভেঙে দিতে হবে। সেই জায়গায় বাংলাদেশের যে তরুণ প্রজন্ম আছে, জুলাইয়ের মাধ্যমে যে প্রজন্মের জন্ম হয়েছে তাদেরকে এখানে নেতৃত্ব দিতে হবে।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) নিয়াজ আহমেদ খানসহ ডাকসুর অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ থাকবে আজ