যে কারণে মরণোত্তর দেহদানের সিদ্ধান্ত নিলেন ঋতুপর্ণা

আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৪, ১১:২৯ এএম

মরণোত্তর দেহদানের সিদ্ধান্ত নিলেন কলকাতার নন্দিত অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। শুক্রবার (৯ আগস্ট) সদ্যপ্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন তিনি। এর পরই তিনি মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার করেন। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘যার পথ অনুসরণ করে তার পিসি, পিসেমশাইও একই পথের পথিক হয়েছেন, আমিও সেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মতোই মরণোত্তর দেহদান করতে চাই।’ 

অভিনেত্রীর ভাষ্য, সৎকার বা দাহ না করে দেহ দান করলে সেটা কোনো মৃত্যু পথযাত্রীকে জীবনের পথে ফেরাতে পারবে। তাঁর মধ্য দিয়ে তিনিও অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারবেন।

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শ্রদ্ধা জানতে গিয়ে জনস্রোতে মিশে মিশে গিয়েছিলেন ঋতুপর্ণা। অনেক মানুষের ভিড় ছিল এদিন, যা দেখে অভিনেত্রীর অনুভূতি হয় যে, মানুষের মনে আলাদা করে জায়গা না থাকলে এ ঘটনা ঘটে না।

সংবাদমাধ্যম থেকে আরও জানা গেছে, শুক্রবার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শ্রদ্ধা জানতে গিয়ে জনজোয়ারে নিজেকে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। কাতারে কাতারে লোক এ দিন স্বতঃস্ফূর্তভাবে পথে; যা দেখে অভিনেত্রীর অনুভূতি, মানুষের মনে আলাদা জায়গা না থাকলে এ ঘটনা ঘটে না।

বুদ্ধিদীপ্ত, ভীষণ রসিক, কথায় কথায় যে মানুষটি মজা করতেন, তার সঙ্গে আর কখনও দেখা হবে না— এটা ভেবে কষ্টে মনটা ছেয়ে গিয়েছিল। মনের পর্দায় ভেসে উঠেছিল পুরোনো দিনের স্মৃতি। যতবার সামনাসামনি হয়েছি, হাসিমুখে কথা বলেছেন। আমার বিয়ের সময় মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতি বসু। তার সঙ্গে আশীর্বাদ করতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও এসেছিলেন। আমার ছেলে অঙ্গনের জন্মের সময় আমেরিকায় ছিলাম। তারপরও আমার মা হওয়ার খবর তার কাছে পৌঁছে গিয়েছিল। ছেলে হওয়ার খবর শুনে তিনি হাসতে হাসতে বলেছিলেন, ‘একেবারে দেশের বাইরে গিয়ে ছেলের জন্ম!’ সেই মুহূর্তগুলো সত্যি কখনও ভুলতে পারব না।

অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘ভালোলাগার বিষয় হলো, আমার অভিনীত ‘পারমিতার একদিন’, ‘আলো’ সিনেমা দুটিও ভীষণ পছন্দের ছিল বুদ্ধদেবের। জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর তাই আলাদা করে আমাকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন। যে মানুষটি এত সহজে আপন করে নিয়েছিলেন, তার জীবনদর্শন আর চলার পথ অনুসরণ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি মরণোত্তর দেহদানের।’

AHA/FI