দেশের ৬২.৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত : গবেষণা

আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৩৬ পিএম

কোভিড-১৯ মহামারী পরবর্তী বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ইন্টারনেট আসক্তি, বিষণ্নতা এবং পর্নোগ্রাফি আসক্তি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের স্কুলগামী কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে এ সমস্যার বর্তমান প্রভাব বিশ্লেষণের উদ্দেশ্যে একটি জাতীয় পর্যায়ের গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। এ গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের স্কুলগামী কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ৬২ দশমিক ৯ শতাংশ পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত।

চীনের নানজিং ইউনিভার্সিটির স্কুল অব দ্য এনভায়রনমেন্টের পিএইচডি শিক্ষার্থী মো. আবু বকর সিদ্দিকের তত্ত্বাবধানে বিখ্যাত উইলি পাবলিশারের ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল হেলথ সায়েন্স রিপোর্টের আগস্ট সংখ্যায় এ গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। এ গবেষণায় মোট ৮ হাজার ৮৩২ কিশোর-কিশোরী অংশগ্রহণ করে। গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, ৬৩ শতাংশ শিক্ষার্থী ইন্টারনেট আসক্তিতে, ৭৬ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী বিষণ্নতায় এবং ৬২ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পর্নোগ্রাফি আসক্তিতে ভুগছে। বিষণ্নতা এবং উদ্বেগজনিত লক্ষণগুলো ইন্টারনেট আসক্তির সঙ্গে উল্লেখযোগ্যভাবে সম্পর্কিত।

গবেষণার বিষয়ে মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মেয়ে শিক্ষার্থীরা ছেলে শিক্ষার্থীদের তুলনায় বেশি বিষণ্নতায় ভুগছে। অপরদিকে, ছেলে শিক্ষার্থীরা মেয়ে শিক্ষার্থীদের তুলনায় পর্নোগ্রাফি আসক্তিতে বেশি ভুগছে। যারা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিন্তু শারীরিক অনুশীলন করেন না, তাদের বিষণ্নতা এবং পর্নোগ্রাফি আসক্তি বেশি।

তিনি আরও বলেন, ইন্টারনেট আসক্তি, বিষণ্নতা এবং পর্নোগ্রাফি আসক্তির নেতিবাচক প্রভাব কিশোর-কিশোরীদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর গভীরভাবে প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে ঘুমের সমস্যা, একাকিত্ব এবং সামাজিক দক্ষতার হ্রাস দেখা দিতে পারে। বিষণ্নতা কিশোর-কিশোরীদের জীবনের প্রতি আগ্রহ কমিয়ে দেয় এবং আত্মহত্যার ঝুঁকি বাড়ায়। পর্নোগ্রাফি আসক্তি কিশোর-কিশোরীদের যৌন আচরণ ও সম্পর্কের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি করতে পারে, যা তাদের মানসিক ও সামাজিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে।

এ গবেষক আরও বলেন, গবেষণাটি ইন্টারনেট আসক্তি, বিষণ্নতা এবং পর্নোগ্রাফি আসক্তি হ্রাসে সমন্বিত মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা, ডিজিটাল লিটারেসি প্রোগ্রাম এবং পরিবার ও শিক্ষকদের অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেছে। কিশোর-কিশোরীদের জন্য নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ তৈরির জন্য নীতিমালা প্রণয়ন এবং শারীরিক অনুশীলনের প্রচারও উৎসাহিত করা হয়েছে।

এ গবেষণায় অবদান রেখেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইরিন পারভিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. খালিদ সাইফুল্লাহ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আখের আলী, ইউনিভার্সিটি সাইন্স মালয়েশিয়ার আল মাহমুদ, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস টেক ইউনিভার্সিটির মেহেদী হাসান, মালয়েশিয়ার আল বুখারী ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শেখ মুযযাম্মিল হোসেন, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোনিয়া মঞ্জুর, ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রামের যোবায়ের আহমেদ এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রিভেন্টিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিনের (নিপসম) মোহাম্মদ মেসবাহউর রহমান।

 

HK/WA
আরও পড়ুন