জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। খাদ্যদ্রব্যে অতিরিক্ত ট্রান্স ফ্যাট অনিরাপদ এবং হৃদরোগসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের অন্যতম কারণ। ট্রান্স ফ্যাট-জনিত হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। সরকার “খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা- ২০২১” পাস করলেও এখনও তা পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ‘জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস’ উপলক্ষ্যে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা আয়োজিত শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব তথ্য তুলে ধরেন বক্তারা।
ওয়েবিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. নাজমা শাহীন বলেন, সম্প্রতি একটি গবেষণায় বোতলজাত সয়াবিন তেলে মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্স ফ্যাটের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিএফএসএ এবং বিএসটিআইসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমরা গবেষণার মাধ্যমে এই মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় চিহ্নিত করার কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছি।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি) ড. মোহাম্মদ মোস্তফা জানান, ভোজ্যতেলে ট্রান্স ফ্যাট কমিয়ে আনার ওপর আমরা বিশেষভাবে জোর দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনা করে খুব দ্রুতই আমরা সমাধানে পৌঁছাবো।
বাংলাদেশ ফুড সেফটি ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যান্ড ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার বলেন, নীতিমালার বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, সরকারি সংস্থা এবং বেসরকারি সংস্থাসমূহকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, ট্রান্স ফ্যাট ঘটিত হৃদরোগে অকাল মৃত্যু কমাতে প্রবিধানমালার বাস্তবায়ন করা জরুরি।
২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল ট্রান্স ফ্যাট এলিমিনেশন প্রতিবেদন অনুযায়ী পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ বিশ্বের ৪৩টি দেশ ইতিমধ্যে খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাটের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে 'সর্বোত্তম নীতি' বাস্তবায়ন করলেও, বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে রয়েছে।
