স্বচ্ছ গ্লাসে রঙিন পানীয়, নিচে গাঢ় রঙের ছোট বল-এটাই বোবা বা বাবল টি। জেন-জি ও আলফা প্রজন্মের কাছে এটি বেশ জনপ্রিয়।
বাবল বা বোবা টি কী
বাবল বা বোবা টি মূলত চা, দুধ ও বোবা পার্লের সমন্বয়ে তৈরি। ঠান্ডা ব্ল্যাক বা গ্রিন টি-তে দুধ, সিরাপ বা ফলের রস মিশিয়ে এটি তৈরি করা হয়। গরম বা ঠান্ডা পরিবেশন করা গেলেও সাধারণত ঠান্ডা অবস্থায় খাওয়া হয়। এর বিশেষত্ব নরম, মিষ্টি ছোট বল-বোবা বা পার্ল, যা ট্যাপিওকা স্টার্চ দিয়ে তৈরি।
যেভাবে এল এই চা
১৯৮০-এর দশকে তাইওয়ানে বোবা টির উৎপত্তি। এক তথ্যে জানা যায়, ১৯৮৬ সালে ব্যবসায়ী তু সোং-হো ইয়ামুলিয়াও বাজারে সাদা ট্যাপিওকা বল দেখে তা দুধ চায়ে মিশিয়ে 'পার্ল মিল্ক টি' তৈরি করেন। পরে ‘হ্যানলিন টি রুম’ নামে দোকান খুলে এই নতুন চা বিক্রি শুরু করেন তিনি। স্বাদের জন্য দ্রুত জনপ্রিয়তা পায় এবং এখন তাইওয়ানে হ্যানলিনের ৪০টিরও বেশি শাখা রয়েছে।
আরেক তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৩ সালে ব্যবসায়ী লিউ হান-চিহ ঠান্ডা দুধ চা বিক্রি শুরু করেন। ১৯৮৭ সালে তাঁর দোকান চুন শুই ট্যাং-এ এক কর্মী মজা করে চায়ে ট্যাপিওকা বল মেশান। চা জনপ্রিয় হয়ে উঠলে এর নাম দেওয়া হয় ‘পার্ল টি’। পরে এটি বাবল বা বোবা টি নামে পরিচিত হয় এবং ধীরে ধীরে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
গত বছর বোবা টি শিল্পের বিশ্বব্যাপী মূল্য ছিল ২.৪ থেকে ৩.৬ বিলিয়ন ডলার, যা এ বছর বেড়ে ৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। জনপ্রিয়তা বাড়ায় ভবিষ্যতে এর চাহিদা কমার সম্ভাবনা কম। বাংলাদেশেও বোবা টি বিক্রি করছে চা মিচি, চা টাইম, কই তে ও গট চা-র মতো রেস্তোরাঁ। এক গ্লাসের দাম ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা। চাইলে ইন্টারনেট থেকে রেসিপি নিয়ে ঘরেও তৈরি করা যায়।
জনপ্রিয়তার কারণ
বোবা টি সাধারণত ব্ল্যাক বা গ্রিন টি দিয়ে তৈরি হয়, যা দুটিই স্বাস্থ্যকর। গ্রিন টি স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, ওজন কমায় ও ক্যানসার-হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়। ব্ল্যাক টি হজমশক্তি ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, তবে এতে থাকা ক্যাফেইন ঘুমে সমস্যা করতে পারে। ট্যাপিওকা স্টার্চে আছে আঁশ, ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা রক্তে শর্করা ও ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এসব কারণে অনেকেই বোবা টিকে স্বাস্থ্যকর পানীয় মনে করেন।
বোবা টিতে ব্যবহৃত চিনি বা সিরাপ ওজন বাড়াতে পারে। তাই এটি স্বাস্থ্যকর কি না, তা নির্ভর করে উপকরণের ওপর। স্বাস্থ্যকর বোবা টি পেতে চাইলে অতিরিক্ত চিনি এড়িয়ে প্রাকৃতিক মিষ্টি যেমন ফল বা স্টেভিয়া ব্যবহার করুন। সঠিক উপকরণে এটি হতে পারে সুস্বাদু ও পুষ্টিকর পানীয়।

‘ফ্রেঞ্চ ফ্রাই’ নিয়ে দুঃসংবাদ দিলেন গবেষকরা
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ২৫২
