দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদে দ্বিতীয় দফায় হাজির হননি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। রোববার (২৩ জুন ) সকাল ১০টায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে হাজির হওয়ার কথা ছিল সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের।
দুদক সূত্র জানায়, রোববার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেনজীর আহমেদকে তলব করা হলেও তিনি আসেননি। তবে তার আইনজীবীর মাধ্যমে বৃহস্পতিবার (২১ জুন) দুদক বরাবর লিখিত বক্তব্য দাখিল করেছেন।
এ বিষয়ে দুপুরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, বেনজীর আহমেদ তার আইনজীবীর মাধ্যমে গত ২১ জুন দুদক চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন। এবারের চিঠিতে তিনি নতুন করে সময়ের আবেদন করেননি। তবে তার বিরুদ্ধে এবং স্ত্রী ও সন্তানদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। বেনজীর আহমেদের লিখিত বক্তব্যের বিষয়ে অনুসন্ধানকারী টিম কমিশনে সুপারিশ করবেন এবং আইন অনুযায়ী পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে, বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যরা গত ৬ ও ৯ জুন দুদকে হাজির হননি । এরপর তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক ২৩ ও ২৪ জুন হাজিরার দিন নির্ধারণ করে। সাবেক আইজিপি ও র্যাবপ্রধান বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয় গত মার্চে। এরপরই বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিশান মির্জা, মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের খোঁজে গত ১৮ এপ্রিল অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।
এর আগে, গত ৩১ মার্চ ‘বেনজীরের ঘরে আলাদিনের চেরাগ’ এবং ৩ এপ্রিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এতে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে আসে। অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক
জানা যায়,গত ২৩ মে আদালতের আদেশে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ৮৩টি দলিলের সম্পত্তি ও ৩৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয় আদালত। অন্যদিকে গত ২৬ মে আদালত বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামের ১১৯টি জমির দলিল, ২৩টি কোম্পানির শেয়ার ও গুলশানে ৪টি ফ্লাট জব্দের আদেশ দেন। গত ২৩ মে তাদের নামীয় ৩৪৫ বিঘা (১১৪ একর) জমি, বিভিন্ন ব্যাংকের ৩৩টি হিসাব জব্দ ও অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে ৬২৭ বিঘা জমি ক্রোক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশের আইজি ছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাব এবং র্যাবের সাবেক ও বর্তমান যে সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয় তাদের মধ্যে বেনজীরও ছিলেন বলে জানা গেছে।
