ঢাকা
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

বাঙালির অধীর অপেক্ষা ৭ মার্চ ঘিরে, গভীর ষড়যন্ত্র ইয়াহিয়ার

আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৩, ১২:১৪ এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক: কোনোভাবেই বাঙালির মুক্তির আন্দোলন স্তব্ধ করতে পারছিলেন না ইয়াহিয়া খান ও জুলফিকার আলী ভুট্টো। ফুঁঁসে ওঠা বিক্ষোভকারীদের ওপর সেনাবাহিনী দিয়ে গুলি চালিয়েও নয়। বরং যতদিন যাচ্ছে, সাড়ে সাত কোটি বাঙালি ছিল ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের অধীর অপেক্ষায়। 

৬ মার্চ সেই অপেক্ষার বিস্তৃতি আরও বাড়ছিল। এদিন টানা ষষ্ঠদিনের মতো রাজপথে আন্দোলনে নামা ছাত্র-শ্রমিকসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষ। তবে পুলিশ-সেনাবাহিনী দিয়ে আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করেন ইয়াহিয়া খান। তাদের গুলিতে রাজশাহীতে ১৪ জন আহত হন। নিহত হন ১ জন। খুলনায়ও চলে গুলি। এতে ৮৬ জন আহত এবং ১৮ জন নিহত হন।

অন্যদিকে ৬ মার্চ বেলা ১১টার দিকে সবচেয়ে বড় ঘটনা ঘটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। এদিন কারাগারের গেট ভেঙে ৩৪১ কয়েদি পালিয়ে যান। পালানোর সময় পুলিশের গুলিতে ৭ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হন। সান্ধ্য আইন বহাল রাখা হয়। 

তবে আন্দোলন দমানোর পাশাপাশি গভীর ষড়যন্ত্র চালাতে থাকেন স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া। ৬ মার্চ ইয়াহিয়া খান দুপুরে এক বেতার ভাষণে ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করেন। ভাষণে তিনি বলেন, যাই ঘটুক না কেন, যতদিন পর্যন্ত পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আমার হুকুমে রয়েছে এবং আমি পাকিস্তানের রাষ্ট্রপ্রধান রয়েছি, ততদিন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ ও নিরঙ্কুশভাবে পাকিস্তানের সংহতির নিশ্চয়তা বিধান করব। এ সময় তিনি ১০ মার্চ রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান।

তবে ইয়াহিয়া বাঙালিকে দমানোর জন্য পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক শাসক লে. জেনারেল সাহেবজাদা ইয়াকুব খানকে সরিয়ে তদস্থলে ‘বেলুচিস্তানের কসাই’খ্যাত লে. জেনারেল টিক্কা খানকে নিযুক্ত করেন। ইয়াহিয়া খানের বেতার ভাষণের পরপরই ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে বেশ কয়েকটি স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার ভাষণকে স্বাগত জানান। রাওয়ালপিন্ডিতে সংবাদ সম্মেলনে ভুট্টো বলেন, তার দল ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদের উদ্বোধনী অধিবেশনের আগেই আলোচনার মাধ্যমে শাসনতন্ত্রের মোটামুটি একটি কাঠামো স্থির করতে চায়।

ইয়াহিয়া খানের ভাষণের পর পাকিস্তান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও পূর্ব শাখার কার্যকরী কমিটির জরুরি যৌথ বৈঠক হয়। কয়েক ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে শেখ মুজিবুর রহমান শহীদদের রক্ত মাড়িয়ে ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে আলোচনায় যেতে অস্বীকৃতি জানান।

এদিকে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জগজীবন রাম জানান, ভারতের ওপর দিয়ে পাকিস্তানের বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে।

সব ছাপিয়ে বাঙালি ও বিশ্বাবাসীর আগ্রহ ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু কী ঘোষণা দেবেন।

#এসএ

আরও পড়ুন