ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বেহাল অংশ পরিদর্শনে এসে তীব্র যানজটের কবলে পড়েন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
বুধবার (৮ অক্টোবর) সকাল সোয়া ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জের সোহাগপুরে আটকা পড়ে উপদেষ্টা ও তার গাড়িবহর। পরে মোটরসাইকেলযোগে সরাইল-বিশ্বরোড মোড় পরিদর্শনে আসেন উপদেষ্টা।
এ ঘটনা পর ওই মহাসড়কে যানজটের প্রধান কারণ হিসেবে ট্রাফিক অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।

এর আগে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দিবাগত মধ্যরাত থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তীব্র যানজট দেখা দেয়। আশুগঞ্জের সোহাগপুর থেকে সরাইলের শাহবাজপুর পর্যন্ত অন্তত ১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
মূলত আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইল-বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার অংশ আশুগঞ্জ-আখাউড়া চারলেন মহাসড়ক প্রকল্পের অধীনে পড়েছে। ফলে এ অংশে নিয়মিত সংস্কার কাজ চালাতে পারেনি সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এছাড়া আর্থিক জটিলতাসহ জুলাই অভ্যুত্থানের পর প্রকল্পের ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভারতে চলে যাওয়ায় নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে মহাসগকের অবস্থা আরও নাজুক হতে থাকে।

এ অবস্থায় প্রকল্পের অগ্রগতি ও বেহাল মহাসড়ক পরিদর্শন করতে আজ সকালে মহানগর প্রভাতি ট্রেনে করে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে নামেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। এরপর সেখান থেকে গাড়িতে করে রওনা হন সরাইল-বিশ্বরোড মোড়ের উদ্দেশ্যে। এ সময় সকাল সোয়া ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আশুগঞ্জের সোহাগপুরে আটকে থাকেন যানজটে। অবশেষে মোটরসাইকেলেযোগে পরিদর্শনস্থলে আসেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির। পরে প্রকল্পের কর্মকর্তাদের নিয়ে সড়ক পরিদর্শন করেন তিনি।
পরিদর্শন শেষে সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, যানজটের মূল কারণ ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা। হাইওয়ে পুলিশের যে দায়িত্ব পালন করার কথা, তা পালন করা হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলব। আগে শৃঙ্খলা আনতে হবে। এজন্য সড়কে ডিভাইডার করে দিব।
এছাড়া বর্ষার কথা চিন্তা করে আশুগঞ্জ গোলচত্বর এবং সরাইল-বিশ্বরোড মোড়ের অংশটুকু ঢালাই করে দেয়া হবে। এছাড়া সরাইল-বিশ্বরোড মোড়ে উড়াল সেতু করার আশ্বাস দেন উপদেষ্টা।

যানজটে পড়ে নিজের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ট্রাফিক শৃঙ্খলা থাকলে কোনো অসুবিধা হতো না। আমার হয়তো আধা ঘণ্টা সময় বেশি লাগত। আমার কাছে মনে হয়েছে প্রধান সমস্যা সড়ক নয়। সবাই রাস্তা চায়। রাস্তা যেভাবে হবে বাসাবাড়ির জন্য জায়গা থাকবে না, শিল্প কারখানা এমনকি কবর দেওয়ার জন্যও জায়গা থাকবে না। সেজন্য আমাদের সড়কের নির্ভরতা কমিয়ে রেল এবং নৌপথের ব্যবহার বাড়াতে হবে।
এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টার সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম ও পুলিশ সুপার এহতেশামুল হকসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
