ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

গাজা এখনো মুক্ত নয়, সংগ্রাম চলবে: শহিদুল আলম

আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৪২ পিএম

গাজা এখনো মুক্ত হয়নি। ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বরতা বন্ধ হয়নি। যতক্ষণ পর্যন্ত সেই নির্যাতন বন্ধ না হবে, ততক্ষণ আমাদের সংগ্রাম চলবে বলে জানিয়েছেন আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম।

শনিবার (১১ অক্টোবর) ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। দেশে ফিরেই গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

শহিদুল আলম বলেন, আজ আমি দেশে ফিরতে পেরেছি, কিন্তু অনেকেই ফিরতে পারেননি। অনেকেই আমাদের সঙ্গে যাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন, কিন্তু আমরা সবাইকে নিতে পারিনি। আমি মনে করি, আগামীবার আমরা হাজারো ফ্লোটিলা নিয়ে যাবো। যতক্ষণ ফিলিস্তিন মুক্ত না হবে, ততক্ষণ আমাদের এই সংগ্রাম চলবে।

তিনি জানান, ফিলিস্তিনে যাওয়ার পথে যে ফ্লোটিলায় তিনি ছিলেন, সেটি ছিল সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ। সেটি সংবাদকর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য নির্ধারিত ছিল। যেহেতু ইসরায়েলি আক্রোশের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে সাংবাদিক ও চিকিৎসকরা, তাই আমাদের ওপর আক্রমণ এড়াতে বড় নৌযানটি ব্যবহার করা হয়।

ইসরায়েলে আটক থাকার সময় শারীরিক নির্যাতনের কথাও তুলে ধরেন শহিদুল আলম। তবে তার চেয়েও বেশি কষ্ট পেয়েছেন বাংলাদেশের পাসপোর্ট মাটিতে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার ঘটনায়।

তিনি বলেন, আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে, কিন্তু তার চেয়েও বেশি অপমানিত বোধ করেছি যখন আমার দেশের পাসপোর্ট মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। আমি এই অপমানের বিচার চাই। যেন কোনো দেশ আমাদের জাতীয় মর্যাদাকে এভাবে অবমূল্যায়ন না করতে পারে।

নৌবহরে শহিদুল আলম ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজনীতিক, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও মানবাধিকারকর্মীরা অংশ নিয়েছিলেন। নৌবহরটি ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন এবং থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা নামক দুটি উদ্যোগের অংশ ছিল, যারা গাজার ওপর চলমান ইসরায়েলি নৌ অবরোধ ভাঙার লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে।

বুধবার (৮ অক্টোবর) ইসরায়েলি বাহিনী বহরে হামলা চালিয়ে সব অংশগ্রহণকারী ও নাবিককে আটক করে। পরে শহিদুল আলমসহ অনেককে কেৎজিয়েত কারাগারে পাঠানো হয়।

বাংলাদেশ সরকার তার মুক্তির জন্য জর্ডান, মিসর ও তুরস্কের মাধ্যমে কূটনৈতিক তৎপরতা চালায়। এসব প্রচেষ্টার ফলেই তার মুক্তি সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।

শহিদুল আলম বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা ও তুরস্ক সরকারের সহযোগিতা আমাকে ফিরে আসার সুযোগ করে দিয়েছে। এজন্য আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পৌঁছানোর পর স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে তাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. মিজানুর রহমান। পরে তিনি সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।

শহিদুল আলমের মুক্তি ও ইসরায়েল থেকে তার প্রত্যাবর্তনে সাহায্য করার জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

DR
আরও পড়ুন