আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে বলে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের জরুরি বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কথার কথা নয়, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে। উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে।
রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, ‘আপনাদের দীর্ঘদিনের আলোচনারই ফল হলো ‘জুলাই সনদ’। অনেক ভেবেচিন্তে, সুচিন্তিত মতামতের মাধ্যমে আপনারা এটি একটি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। এর মাধ্যমে আপনারা ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছেন। হয়তো এখনো প্রক্রিয়ার ভেতরে থাকায় এর গভীরতা ও গুরুত্ব পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারছেন না।’

তিনি আরও জানান, ‘জুলাই সনদ’-এর একটি কপি প্রতিটি দলের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। ‘আমি যতদিন এখানে আছি, আপনাদের তৈরি এই গুরুত্বপূর্ণ দলিল সংরক্ষণ ও প্রচারের দায়িত্ব পালন করবো। প্রত্যেকের হাতে কপি পৌঁছে দেবো, যাতে আপনারা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারেন- কোন কোন বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। এই দলিলটি সমাজে ছড়িয়ে দিতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষও এর গুরুত্ব ও বিষয়বস্তু সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা লাভ করতে পারে।’

প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানান, ‘জুলাই সনদ’-এ যেসব সিদ্ধান্ত এসেছে, সেগুলো দৈনন্দিন জীবন এবং রাজনৈতিক চর্চায় বাস্তবায়ন করতে হবে।
এর আগে, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা অংশ নেন।

গত মঙ্গলবার, বহু প্রতীক্ষিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫’-এর চূড়ান্ত অনুলিপি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়। তবে সনদে উত্থাপিত সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে কোনো সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। পরে কমিশন এ বিষয়ে বিস্তারিত সুপারিশ পেশ করবে।

জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন খাতে সংস্কার উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষ্যে ৬টি পৃথক সংস্কার কমিশন গঠিত হয়- সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন, পুলিশ এবং বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। এই কমিশনগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
