নির্বাচন থেকে বাদ আ. লীগ, কার বাক্সে পড়বে সমর্থকদের ভোট

আপডেট : ১৫ মে ২০২৫, ০২:০১ পিএম

গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ দল হিসেবে নির্বাচন থেকে বাদ পড়ায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনীতিকদের অনেকে। দলটি নিষিদ্ধ হওয়ায় কার লাভ হলো কিংবা কার লোকসান তা নিয়েও চলছে হিসাবনিকাশ।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনে নিয়ন্ত্রণ ছিল এনসিপি এবং জামায়াতসহ ইসলামপন্থী বিভিন্ন দল ও সংগঠনের হাতে। দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি এই আন্দোলনে অংশ না নিলেও আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছে। এই অবস্থায় বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, কার বাক্সে পড়বে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের ভোট?

দেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের একটি ভোট ব্যাংক রয়েছে। এখন আগামী নির্বাচনে কার্যত নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে এই ভোটাররা কী করবেন, ভোটকেন্দ্রে যাবেন কি না সে বিষয়টিও আলোচনায় আসছে।

তবে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপি ওই ভোটারদের দিকেও নজর রাখছে।

লেখক মহিউদ্দিন আহমদ বলছেন, সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও জেলে যাওয়া বা হয়রানির যে সব ঘটনা ঘটছে, এ ক্ষেত্রে বিএনপির ভূমিকা নিয়ে আওয়ামী লীগের ভেতরে আলোচনা রয়েছে।

সে কারণে আওয়ামী লীগের ভোট বিএনপিকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো দলের পক্ষে যায় কি না, এটি বিএনপির জন্য চিন্তার বিষয় হতে পারে। আবার বিএনপির বাক্সেই ওই ভোট যায় কি না, জামায়াত ও এনসিপির এই বিপরীত চিন্তা রয়েছে বলে মনে করেন এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

এ ছাড়া এই দলগুলো আওয়ামী লীগের ভোট নিজেদের পক্ষে টানার চেষ্টা করবে, তাদের দিক থেকেই এমন ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে বলে বিশ্লেষকেরা বলছেন।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকেই রাজনীতিতে নানা সমীকরণ বা মেরুকরণের কথা শোনা যাচ্ছিল। এনসিপি, জামায়াত এবং ইসলামপন্থি দল ও সংগঠনগুলোরই নানামুখী তৎপরতা বেশি দেখা গেছে।

এখন রাজনীতিতে এবং ভোটের মাঠেও আওয়ামী লীগের কোনো সুযোগ না থাকায় সক্রিয় দলগুলোর তৎপরতা বেড়েছে। এসব দলের পক্ষ থেকে কখনো বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড়াতে আলাদা নির্বাচনি জোট করার চেষ্টা আলোচনায় আসছে। আবার এনসিপিসহ এসব দল বিএনপির সঙ্গেই নির্বাচনে আসন সমঝোতার প্রশ্নে আলোচনা চালাচ্ছে বলেও জানা যাচ্ছে।

তবে রাজনীতি কোন দিকে মোড় নিচ্ছে- এই প্রশ্নের জবাব দৃশ্যমান হতে আরও অপেক্ষা করতে হবে।

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেছেন, নির্বাচন লক্ষ্য করে এখন দলগুলোর তৎপরতা বেড়েছে। তবে কে কার সঙ্গে ঐক্য বা জোট করবে, তা এখনই বলা মুশকিল।

বিএনপিসহ অন্য দলগুলোর বক্তব্যও একইরকম। তারা বলছেন, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় ঘোষণা করা হলে সে পর্যায়ে দলগুলোর অবস্থান দৃশ্যমান হবে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন করার কথা বলে আসছে।

কিন্তু সেই সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া হবে কি না এ প্রশ্নে বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের মধ্যে নতুন করে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বললে তারা সংস্কার নিয়ে অনিশ্চয়তার কথাও বলছেন।

RK/JA
আরও পড়ুন
সর্বশেষপঠিত