উত্তর গোলার্ধের বাসিন্দাদের জন্য রোববার (২১ ডিসেম্বর) বছরের দীর্ঘতম রাত। সূর্যের দক্ষিণায়নের ফলে আজ রাতের দৈর্ঘ্য হবে সর্বাধিক এবং দিন হবে বছরের সবচেয়ে ছোট। অন্যদিকে, দক্ষিণ গোলার্ধে আজ দেখা যাবে ঠিক উল্টো চিত্র; সেখানে আজ বছরের দীর্ঘতম দিন এবং ক্ষুদ্রতম রাত।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবী তার কক্ষপথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার সময় নিজের অক্ষের ওপর ২৩.৫ ডিগ্রি কোণে হেলে থাকে। বছরের এই সময়ে উত্তর গোলার্ধ সূর্য থেকে সবচেয়ে বেশি দূরত্বে অবস্থান করে। আজ সূর্য মকরক্রান্তি রেখার (Tropic of Capricorn) ওপর লম্বভাবে অবস্থান করছে। পৃথিবীর অক্ষীয় হেলনের কারণে উত্তর মেরুতে সূর্যের আলো সবচেয়ে কম সময় পড়ে, যার ফলে দিন দ্রুত শেষ হয়ে যায় এবং রাত হয় দীর্ঘতম।
এই প্রাকৃতিক ও মহাজাগতিক ঘটনাকে বলা হয় ‘শীতকালীন অয়নান্ত’ বা ‘উইন্টার সলসটিস’। উত্তর গোলার্ধে আজকের দিনটিই শীতের আনুষ্ঠানিক সূচনা বা শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সংকেত হিসেবে গণ্য করা হয়। আজ দুপুরবেলা উত্তর গোলার্ধে সূর্যকে দিগন্তের সবচেয়ে নিচু অবস্থানে দেখা যায়।
ভিডিও জগতে নতুন আপডেট অ্যাডোবিরযখন উত্তর গোলার্ধে (বাংলাদেশসহ এশিয়া, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা) হাড়কাঁপানো শীত আর দীর্ঘতম রাত, তখন দক্ষিণ গোলার্ধে (অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা) চলছে প্রচণ্ড গ্রীষ্ম এবং বছরের দীর্ঘতম দিন। আজ দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে সবচেয়ে বেশি হেলে থাকায় সেখানে দিনের দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি।
২১ ডিসেম্বরের এই দীর্ঘতম রাতের পর থেকেই মূলত সূর্যের উত্তরায়ন শুরু হয়। অর্থাৎ আগামীকাল থেকে উত্তর গোলার্ধে দিন ধীরে ধীরে বড় হতে শুরু করবে এবং রাতের দৈর্ঘ্য কমতে থাকবে। এই প্রক্রিয়া চলবে আগামী ২১ জুন পর্যন্ত, যা হবে বছরের দীর্ঘতম দিন।
বাংলা ভাষার প্রথম এআই প্ল্যাটফর্ম ‘কাগজ ডট এআই’ চালু প্রাচীনকাল থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতি ও সভ্যতায় এই দিনটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে আসছে। স্টোনহেঞ্জ থেকে শুরু করে প্রাচীন রোমান বা মায়া সভ্যতায় ‘উইন্টার সলসটিস’ উপলক্ষে নানা উৎসব ও আচার পালন করা হতো। তারা এই দিনটিকে অন্ধকারের অবসান এবং আলোর প্রত্যাবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখত।
প্রকৃতির এই অমোঘ নিয়ম শুধু দিন-রাতের দৈর্ঘ্যই পরিবর্তন করে না, বরং পৃথিবীর আবহাওয়া, জলবায়ু এবং কৃষিকাজের ওপরও গভীর প্রভাব ফেলে।
