বর্ষাকাল ও অল্প বন্যায় কানায় কানায় ভরে যাবে ব্রহ্মপুত্র নদ, ভাঙবে দুপাড়। প্রবল ভাঙনের কবলে পড়বে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের প্যোল্যাকান্দি নামাপাড়া, মধ্যপাড়া ও ফারাজীপাড়া গ্রাম তিনটি। ভাঙনে বিলীন হবে বসতবাড়ি, আবাদি জমি, স্কুল-মাদ্রাসাসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা। ভিটামাটি, আবাদি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হবে শত-শত মানুষ।
ভাঙন রোধে সরকারি পদক্ষেপ না পেয়ে পোল্যাকান্দি মধ্যপাড়া এলাকাবাসী নিজেদের অর্থায়ন ও স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মাণ করছেন বাঁশের বাঁধ। এতে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনকবলীত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে উজান থেকে বয়ে আসা পানির তীব্র স্রোতের আগ্রাসী আঘাত থেকে রক্ষা করবে পাড়কে। সাময়িকভাবে বন্ধ হবে ওই এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের ভয়াবহ ভাঙন।
প্রায় চল্লিশ বছর আগে থেকে এ অঞ্চলে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন চলছে। ইতোপূর্বে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বিলীন হয়েছে পোল্যাকান্দি নামাপাড়া, মধ্যপাড়া, পূর্বপাড়া, ফারাজীপাড়া, মাদারের চর, মদনেরচর, গুমেরচররসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। একপাড় ভেঙে গড়েছে অন্যপাড়।

ভাঙন কবলীত মানুষ বসতিস্থাপন করেছেন নদের জেগে ওঠা চরে। সময়ের বিবর্তনে ব্রহ্মপুত্র গতি পরিবর্তিত হয়। আবারও ভাঙন শুরু হয়েছে নতুন বসতিস্থাপন করা জেগে ওঠা চরের দিকে। বর্তমানে ভাঙনের মুখে রয়েছে পোল্যাকান্দি নামাপাড়া, মধ্যপাড়া ও ফারাজীপাড়া।
এলাকাবাসী ভাঙন রোধে সরকারি পদক্ষেপের আশায় দৌঁড়ঝাপ করেছেন সংশ্লিষ্ট মহলে। কিন্ত মেলেনি ভাঙন রোধে কোনো প্রতিকার। বাধ্য হয়ে নিজেরা অর্থ ও স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে নির্মাণ করছেন বাঁশের বাঁধ। পোল্যাকান্দি মধ্যপাড়ার পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্রের বামতীর ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সাতটি স্থানে নির্মাণ করবেন বাঁশের এই বাঁধ। এতে ভাঙনের হাত থেকে বেঁচে যাবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন, কয়েকটি পাকা মসজিদ ও অন্তত ছয়শত পরিবারের বসতবাড়ি। স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধে সরকারের পদক্ষেপের দাবি জানান এলাকাবাসী।
জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ভাঙন জায়গা পরিদর্শন করেছেন। ঊর্ধ্বতন দপ্তরে জরুরি কাজ বাস্তবায়নের জন্য উপস্থাপনা প্রেরণ করা হয়েছে। উপস্থাপনাটি অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অনুমোদন হলে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং-এর মাধ্যমে প্রতিরক্ষামূলক কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।
তবে দ্রুত সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে বাঁধ নির্মাণ করে এই এলাকা রক্ষা করবে এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।
