শুরুটা ছিল দারুণ, কিন্তু শেষটা সুখকর হলো না বাংলাদেশের। ৪৯ ওভার শেষেও যে স্কোর সহজ মনে হয়েছিল, একটা ওভারে সেই স্কোর অ্যালান কিং একাই সেটা নিয়ে গেলেন বহুদূর পর্যন্ত। ৪ ছয় আর ১ চারে ২৮ রান নিয়েছেন নয়ে নামা অ্যালানা। অজি নারীদের স্কোর তাতেই গেল ২১৩ পর্যন্ত।
ইনিংসের শেষ ওভারে বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি বল তুলে দিয়েছিলেন ফাহিমা খাতুনের হাতে। তার ওভারে অস্ট্রেলিয়া তুলে নেয় ২৯ রান। আর তাতেই এখন বিশাল লক্ষ্যের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ।
মিরপুরের স্পিনিং আর স্লো উইকেটে এর আগেও অনেকেই বিপর্যয়ে পড়েছিলেন। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সেই একই অবস্থা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মেয়েদের। অ্যালিসা হিলি, ফোবে লিচফিল্ড, বেথ মুনি কিংবা তাহলিয়া ম্যাকগ্রাদের কেউই নিজেদের চেনাতে পারেননি মিরপুরের মন্থর উইকেটে। ৫০ রানের আগেই ৪ উইকেট হারানোটাই প্রমাণ করে শুরুর দিকে টাইগ্রেস বোলারদের দাপট কেমন ছিল।
সেখান থেকে অবশ্য পরে ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছে অজি মেয়েরা। অ্যানাবেল সাদারল্যান্ডের দারুণ এক ফিফটি আর অ্যালানা কিংয়ের চল্লিশ পেরুনো ইনিংসের সঙ্গে অ্যাশলি গার্ডনারের ৩২ রানে ভর করে শেষদিকে রানের চাকা ঠিকই ঘুরিয়েছে সফরকারীরা। আর সেই সঙ্গে হিলির ২৪ এবং মুনির ২৫ রানের দুই ইনিংস অজিদের দিয়েছে ২১৩ রানের চ্যালেঞ্জিং এক স্কোর।
বাংলাদেশ শুরুটা করেছিল দারুণ। প্রথম ওভারেই মারুফা আভাস দিয়েছিলেন এই পিচে সুইং থাকবে। আর দ্বিতীয় ওভারে সুলতানা দিলেন পূর্ণতা। মিরপুরের শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে বল করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। অধিনায়ককে সমর্থন দিতেই যেন নিজের প্রথম বলেই সুলতানা পেলেন উইকেটের দেখা।
ইনফর্ম ফোবে লিচফিল্ডকে দারুণ সুইংয়ে বোকা বানান। গোল্ডেন ডাক মেরে ফেলেন এই ওপেনার। অভিজ্ঞ এলিস পেরি থিতু হতে চেয়েছিলেন। ১০ বলে ২ রান করে তাকেও ফেরান সুলতানা। রাবেয়া খানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
ক্রিজে থেকে রানের গতি বাড়াচ্ছিলেন অ্যালিসা হিলি। সবাই যখন থিতু হতেই সময় নিয়েছেন, তখন শুরু থেকেই দারুণ ছন্দে ছিলেন হিলি। ৩৯ বলে ২৪ রান করে ভয় ছড়াচ্ছিলেন তিনিই। তবে তাকে আর বড় হতে দেননি মারুফা। এদিন শুরু থেকেই সুইং পাচ্ছিলেন এই পেসার। অজি অধিনায়ক হিলিকে ফিরিয়েছেন তিনিই। উইকেটের পেছনে জ্যোতিকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অ্যালিসা হিলি।
৭৮ রানে ৫ উইকেটের পতন থেকে অজিদের ঘুরে দাঁড়ানো শুরু। অ্যাশলি গার্ডনার এবং জর্জিয়া ওয়্যারহ্যাম দুজনের সঙ্গেই ৩৪ রানের জুটি গড়েছেন অ্যানাবেল। গার্ডনার ৩২ করে ফেরেন নাহিদার বলে। স্ট্যাম্পিংয়ে তাকে ফেরান জ্যোতি। আর ওয়্যারহ্যাম ফিরেছেন স্বর্ণার বলে। স্লিপে চোখে পড়ার মতো ক্যাচ নিয়েছিলেন রাবেয়া।
অ্যালানা কিং এসে অ্যানাবেলকে সঙ্গ দিয়েছেন। খুব বেশি বাউন্ডারি না এলেও রান পেয়েছেন নিয়মিত। শুরুর ধাক্কা সামলে অজিদের ইনিংসটাও বড় হয়েছে অনেকটা। শেষ ওভারে অ্যালানা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছেন ফাহিমার ওপর। এক ওভারেই এসেছে ২৯ রান। তাতেই অজিদের সংগ্রহ পৌঁছে যায় ২১৩ পর্যন্ত।
