ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান উত্তেজনা শুধু ভূরাজনীতিতে নয়, সরাসরি প্রভাব ফেলেছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আইপিএলে। হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় অনুষ্ঠিত আইপিএল ম্যাচ চলাকালীন হঠাৎ ব্ল্যাকআউট ও সন্ত্রাসী হামলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্কে ভেঙে পড়েছেন বিদেশি ক্রিকেটার, কোচ, আম্পায়ার এবং সম্প্রচারক টিমের সদস্যরা। এখন অনেকেই ভারতের মাটি ছেড়ে দেশে ফেরার চিন্তা করছেন, কেউ আবার ইতিমধ্যেই ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন ফ্র্যাঞ্চাইজিকে।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই-র এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে একাধিক বিদেশি ক্রিকেটার ও ম্যাচ সংশ্লিষ্ট স্টাফ বিসিসিআই-এর কাছে জানতে চেয়েছেন, কীভাবে তারা দ্রুত ও নিরাপদে দেশে ফিরতে পারেন। তাদের বক্তব্য-ক্রিকেট কোনো যুদ্ধের মধ্যে চলতে পারে না। বর্তমান পরিস্থিতি তাদের জন্য নিরাপদ নয়, বিশেষ করে যারা পরিবারসহ ভারতে অবস্থান করছেন।
ধর্মশালার ম্যাচ বাতিল হওয়ার পর আতঙ্ক বেড়ে গেছে বহুগুণে। ওই ম্যাচের সময় আচমকা স্টেডিয়ামের আলো নিভে যায়, বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ। পরে জানা যায়, কাশ্মীর অঞ্চলে পাকিস্তানি ড্রোনের আশঙ্কায় হিমাচল প্রদেশে জারি করা হয়েছিল জরুরি ব্ল্যাকআউট। খেলোয়াড়রা তখন মাঠে, গ্যালারিতে ছিলেন হাজার হাজার দর্শক। এমন পরিস্থিতি অনেক বিদেশি খেলোয়াড়ের জন্য ছিল জীবনের প্রথম-যেটা শুধু চমকে দেয়নি, বরং নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
বিদেশি ক্রিকেটারদের এমন মনোভাব সম্পর্কে বিসিসিআই সূত্রে জানা গেছে, খেলোয়াড়দের মানসিক চাপ ও ভীতির বিষয়টি বোর্ড গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে। আইপিএল চেয়ারম্যান অরুণ ধুমাল জানিয়েছেন, 'আমরা পরিস্থিতির দিকে গভীরভাবে নজর রাখছি। সরকারের দিকনির্দেশনা অনুযায়ীই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তাই আমাদের অগ্রাধিকার।'
আইপিএল আয়োজকদের এখন একদিকে ম্যাচ সূচি রক্ষা, অন্যদিকে বিদেশিদের আস্থা ফেরানো-এই দুই সংকট একসঙ্গে সামাল দিতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে ধর্মশালার ১১ মে’র ম্যাচটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে আহমেদাবাদে। তবে শুধু ভেন্যু বদলই হয়তো সমাধান নয়। আতঙ্কের ছায়া ঘনীভূত হলে একের পর এক বিদেশি তারকা দল ছাড়তে পারেন।
একই রকম উদ্বেগ পাকিস্তান সুপার লিগেও। রাওয়ালপিন্ডিতে হামলার আশঙ্কায় টুর্নামেন্ট সরিয়ে নেওয়া হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে।