বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের ভারত সফর নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন অনিশ্চয়তা। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি–টোয়েন্টি খেলতে ভারতে যাওয়ার কথা থাকলেও সেই পরিকল্পনা এখন আর আগের মতো নিশ্চিত নয়। ভারতের সরকারি অনুমোদন না মেলায় সিরিজটি স্থগিত হওয়ার আশঙ্কা জোরালো হয়ে উঠেছে। হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, পুরুষদের সিরিজ পিছিয়ে যাওয়ার পর এবার নারীদের সিরিজও একই পরিণতি বরণ করতে পারে।
এ সফরটি ছিল বাংলাদেশের মেয়েদের জন্য বিশেষ প্রত্যাবর্তনের সুযোগ। ২০১৩ সালের এপ্রিলের পর আর ভারতের মাটিতে কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে পারেনি বাংলাদেশ নারী দল। প্রায় ১২ বছর পর সেখানে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে পারলে নিগার সুলতানারা ফিরে পেতেন মূল্যবান অভিজ্ঞতা এবং হারানো সুযোগগুলোর প্রতিদান। উপরন্তু সিরিজটি ছিল আইসিসির ভবিষ্যৎ সূচির অংশ-যা এটিকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছিল।
বিসিবি অবশ্য প্রস্তুত ছিল পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোতেই। বোর্ডের এক কর্মকর্তা কিছুদিন আগে জানিয়েছেন, খসড়া সূচি অনুযায়ী ১৪-১৫ ডিসেম্বরের দিকেই সফরের কথা ভাবা হয়েছিল। সেই সময় ধরে বিসিসিআইকেও চূড়ান্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তার বক্তব্য পুরো ছবি বদলে দিল। তিনি জানান, সিরিজটির জন্য এখনো ভারতের সরকারি অনুমতি মিলেনি। অনুমোদন না পেলে তারা বিকল্প আরেকটি সিরিজ আয়োজনের দিকেও তাকিয়ে আছে।
এই পরিস্থিতি নতুন নয়। পুরুষ দলের সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটেছে মাত্র কয়েক মাস আগে। আগস্টে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলতে ভারতীয় পুরুষ দলের বাংলাদেশ সফর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভারত সরকারের অনুমোদন না থাকায় তা স্থগিত হয়ে গেছে। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, সেই সফর পেছানো হয়েছে ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন ক্রিকেটেও যে ছায়া ফেলছে, এই দুটি ঘটনাই যেন তার ইঙ্গিত।
ব্যাপারটি আরও অদ্ভুত মনে হয় যখন দেখা যায়, ক্রিকেটে অনুমতি না মিললেও ভারত ফুটবল দল ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সফর করছে। ফলে প্রশ্ন উঠছে, অনুমোদন-সংক্রান্ত এই জটিলতার নেপথ্যে কি কেবল আনুষ্ঠানিকতা, নাকি রয়েছে আরও গভীর রাজনৈতিক হিসাব?
বাংলাদেশ নারী দল সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিপক্ষে বেশ কয়েকটি সিরিজ খেলেছে-গত বছর পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি, তার আগে মিরপুরে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি। সাফল্য খুব একটা না এলেও ধারাবাহিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্য দিয়ে মূল্যবান অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিল দল। ভারতের মাটিতে দীর্ঘ বিরতির পর খেলার সুযোগটি তাই তাদের জন্য বড় একটি পদক্ষেপ হওয়ার কথা ছিল।
