এশিয়ান কাপের দল গঠনের প্রসঙ্গ উঠতেই মুখভঙ্গি কঠোর হয়ে গেল জাতীয় নারী ফুটবল দলের কোচ পিটার বাটলারের। সাবিনা খাতুন বা মাসুরা পারভীনকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে প্রশ্ন শেষ পর্যন্ত তাঁকে বিরক্তই করল। সাংবাদিকের প্রশ্ন থামিয়ে তিনি শুধু বললেন, ‘এ ব্যাপারে আর কোনো প্রশ্ন করবেন না।’
তার স্পষ্ট প্রত্যাখ্যানই ইঙ্গিত দেয়, আলোচিত দুই ফুটবলারকে সামনে রেখে এশিয়ান কাপের পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে না, অন্তত বাটলারের ভাবনায় নয়।
কোচের মাথায় এখন একটাই লক্ষ্য-‘মিশন অস্ট্রেলিয়া’। সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই ঘরের মাঠে আয়োজন করা হয়েছে মালয়েশিয়া ও আজারবাইজানকে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ। জাতীয় স্টেডিয়ামে আগামীকাল মালয়েশিয়ার বিপক্ষে সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ; ২ ডিসেম্বর প্রতিপক্ষ আজারবাইজান। সিরিজ ঘিরে মেয়েরা ইতিমধ্যে দীর্ঘ ক্যাম্পে নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছে। থাইল্যান্ড সফরের আগে তারা চট্টগ্রামের কোরিয়ান ইপিজেডে বিশেষ ক্যাম্প করেছিল, আর এবারও সেখানে টানা ২২ দিনের প্রস্তুতি শেষে ঢাকায় ফিরেছে দল।
সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার জানান খেলোয়াড়রা এবার সামগ্রিকভাবে অনেক ভালোভাবে একসঙ্গে অনুশীলন করতে পেরেছেন। মালয়েশিয়া ও আজারবাইজান র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকলেও দলের লক্ষ্য দুই ম্যাচেই সর্বোচ্চটা দেওয়া। মালয়েশিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ ২০২২ সালে ঘরের মাঠে ৬-০ গোলের বড় জয় পেয়েছিল, যদিও র্যাঙ্কিংয়ে তারা বাংলাদেশের চেয়ে উঁচুতে, ৯২। আজারবাইজান আরও শক্তিশালী, অবস্থান ৭৪ নম্বরে; বাংলাদেশ ১০৪। ইউরোপের দলের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো খেলার সুযোগ পেয়ে খানিক উত্তেজনাই প্রকাশ করলেন অধিনায়ক, যদিও দলের ভিডিও বিশ্লেষণ এখনো হাতে পায়নি তারা।
থাইল্যান্ড সফরে দুটি ম্যাচেই হার বাংলাদেশের। তবে বাটলার এতে হতাশ নন; বরং তিনি এটাকে শিখে এগোনোর ধাপ হিসেবে দেখছেন, ‘শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে খেললে গোল তো খাবেনই। আমরা থাইল্যান্ডের লেভেলে নেই, দক্ষিণ কোরিয়ার লেভেলেও না। তারা গোছানো, দক্ষ এবং আর্থিকভাবে শক্তিশালী।’ তবে তিনি এটাও মনে করিয়ে দিলেন, গত ১৮ মাসে দল অনেক অগ্রগতি করেছে এবং মেয়েরা তাঁর পরিকল্পনায় ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ও ক্লাব ফুটবলের বিকাশ নিয়েও আশাবাদী তিনি।
ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষে বাংলাদেশ আবার ফিরবে চট্টগ্রামে। নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ জানান, সেখান থেকে মালয়েশিয়ায় যাবে সিনিয়র ও অনূর্ধ্ব-২০ দল, যেখানে তারা মালয়েশিয়ার জাতীয় ও ক্লাব দলের বিপক্ষে ম্যাচ খেলবে। বাফুফের পরিকল্পনা ছিল ১৫ ডিসেম্বর থেকে নারী ফুটবল লিগ আয়োজনের, তবে সেটি পিছিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে বাটলারের অনুযোগের সুরও শোনা গেল, ‘সত্যিই আমাদের একটি লিগ দরকার। দুর্ভাগ্যবশত তা নেই। প্রতিবেশী ভুটানের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।’
