পৃথিবীর কোনও দেশেই আর কোনও শিশু জন্ম নিচ্ছে না। হঠাৎ করে পুরো বিশ্ব ‘জিরো বার্থ’ (Zero Birth) মুডে চলে গেছে। এই পরিস্থিতিতে মানব সভ্যতা আর কত বছর টিকে থাকতে পারবে?
বিজ্ঞানীদের মতে, এমনটা হলে প্রায় ১০০ বছরের মধ্যেই মানব জাতির অস্তিত্ব শেষ হয়ে যেতে পারে। তবে প্রকৃত বিপর্যয় অনেক আগে থেকেই শুরু হবে। যুব জনসংখ্যা না থাকলে, কৃষিকাজ, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবহন-এই সব পরিষেবাগুলো ভেঙে পড়বে। খাবারের ঘাটতি হবে, ওষুধ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে, এমনকী পরিষ্কার পানীয় জলও সংকটে পড়বে।
অর্থাৎ যদিও জনসংখ্যা কমতে থাকে, সম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনা পুরোপুরি ভেঙে পড়বে। নতুন কোনো প্রযুক্তি আর উদ্ভাবিত হবে না, রোগের চিকিৎসা সম্ভব হবে না, আর মানুষ একাকীত্ব ও অরাজকতার শিকার হবে।
জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলোতে জন্মহার আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। এছাড়া তাইওয়ান, ইতালি, জার্মানি, সুইডেন, ব্রাজিল, মেক্সিকো, চীন, অস্ট্রেলিয়া কম সন্তান নিচ্ছেন অনেকেই আগে থেকেই।
আমেরিকায় ২০২৪ সালে ৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন শিশু জন্মেছে, যেখানে ২০ বছর আগে এই সংখ্যা ছিল ৪ দশমিক ১ মিলিয়ন। অন্যদিকে, মৃত্যুহার বাড়ছে। ২০২২ সালে মৃত্যু হয়েছিল ৩ দশমিক ৩ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের। যদি এই প্রবণতা চলতে থাকে তা হলে জনসংখ্যা ক্রমাগত কমতেই থাকবে। সামাজিক ভারসাম্য ভেঙে পড়বে।
আমাদের পূর্বপুরুষ হোমো সেপিয়েন্স (Homo sapiens) প্রায় ২ লক্ষ বছর ধরে পৃথিবীতে আছে। কিন্তু আমাদের নিকট আত্মীয় নিয়ান্ডারথাল (Neanderthal) জাতি ৪০ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যায়। কারণ তারা সম্পদের সঠিক ব্যবহার করতে পারেনি এবং প্রজনন হারে পিছিয়ে পড়েছিল। আজকের কম জন্মহার, তার সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন, যুদ্ধ, আর মহামারীর মতো বিশ্বব্যাপী ঝুঁকি যদি চলতেই থাকে, তা হলে মানব জাতির বিলুপ্তি কল্পনা নয় বরং একটি সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ। সূত্র: দ্য কনভারসেশন (ওয়েবসাইট)
