পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক বাণিজ্য বাড়াতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কমিশন করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, পাকিস্তান থেকে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে আমদানি করতে এ কমিশন করা হবে। পাশাপাশি পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের বেশকিছু সমঝোতা সই হবে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খানের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা উভয় পক্ষ খুব খোলামেলা আলোচনা করেছি। আমরা দু’দেশের বাণিজ্য বাড়াতে একমত হয়েছি। খাদ্য ও কৃষি উন্নয়নে আমরা কাজ করতে চাই। কিছু কিছু মধ্যবর্তী পণ্য যৌথভাবে উৎপাদনে যেতে পারলে উভয় দেশ উপকৃত হবে। খাদ্য ও কৃষি পণ্যে জোড় দেওয়া হয়েছে। আমাদের ফল আমদানি ও রপ্তানি নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা আনারস রপ্তানির কথা বলেছি। স্থানীয়ভাবে চিনি উৎপাদনে পাকিস্তানের সাহায্য চেয়েছি। তারা সব বিষয় আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছে।
তিনি বলেন, অ্যান্টি ডাম্পিং বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর বাইরে পাকিস্তান হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড আমদানির ওপর অ্যান্টি ডাম্পিং ট্যাক্স আরোপ করেছিল, আমরা সেটা সরিয়ে নিতে অনুরোধ করেছি। তারা এটা রাখবে আশা করি৷ আমরা পাকিস্তান বাজারে ডিউটি ফ্রি ১ কোটি কেজি চা রপ্তানির কথা জানিয়েছি। পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী আরও তিন দিন থাকবেন, এটা নিয়ে আরও আলোচনা হবে। পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের বেশকিছু সমঝোতা সই হবে।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমরা দু’দেশের মধ্যে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কমিশন করতে চাই। কারণ দু’দেশে ব্যবসার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে৷।
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ালে ভারতের সঙ্গে আরও বৈরিতা বাড়বে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার কাজ হচ্ছে বাণিজ্যে সক্ষমতা তৈরি করা। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করুন। এটা আমার কনসার্ন নয়। আমরা দেশের স্বার্থে কাজ করছি। বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য দেশের স্বার্থে অন্য যে যে দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানো প্রয়োজন, আমরা সেটা করব।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের যে পাওনা-দেনা ছিল, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা বাণিজ্যের কোনো বিষয় না। আর এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রায় দেড় দশক বাংলাদেশ সঙ্গে পাকিস্তানের বাণিজ্য ছিল না বললেই চলে। তারা আমাদের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহ দেখিয়েছে। আমরাও বাণিজ্য বাড়াতে অসুবিধা দেখছি না। উভয় দেশের স্বার্থ সমুন্নত রেখে এ বাণিজ্য বাড়ানো যায়। আমাদের উপদেষ্টা ধারণা দিয়েছেন, পাকিস্তানে কী কী রপ্তানি করতে পারি। আমরা পাকিস্তান থেকে বেশি আমদানি করি, কিন্তু রপ্তানি কম। আমরা চাই এটা পরিবর্তন হোক, আমরাও যেন বেশি রপ্তানি করতে পারি। এতে বাংলাদেশের জন্য লাভজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার, বাংলাদেশে পাকিস্তানের হাইকমিশনের রাজনৈতিক কাউন্সিলর কামরান ধাংগাল, বাণিজ্য ও বিনিয়োগবিষয়ক প্রতিনিধি জাইন আজিজ এবং বাণিজ্য সহকারী ওয়াকাস ইয়াসিন।
