শতবর্ষী ইতিহাসের সাক্ষী রয়্যাল এনফিল্ড বাইক নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে যেমন উৎসাহ, তেমনি মিলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও। বাংলাদেশের বাইকার সমাজে বারবার উচ্চারিত হচ্ছে এক নাম, রয়্যাল এনফিল্ড। কেউ এটিকে বলছে মর্যাদার প্রতীক, কেউ আবার দেখছে স্বপ্নের বাইক হিসেবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এর হাইপ দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, রাজপথে কিংবদন্তি রয়্যাল এনফিল্ড নিয়ে সত্যিকার অর্থে কতটা খুশি বাইকপ্রেমীরা।
ঐতিহ্য আর রাজকীয়তার প্রতীক রয়্যাল এনফিল্ড মোটরবাইক। বছরখানেক ধরে বাংলাদেশেও মিলছে এই বাইক। শতবর্ষী ইতিহাসের সাক্ষী এই বাইক নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে যেমন উৎসাহ, তেমনি মিলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও।
রোমাঞ্চ, ঐতিহ্য আর মর্যাদার প্রতীক— রয়্যাল এনফিল্ড। সেই ১৯০১ সালে ইংল্যান্ডের রেডিচ শহরে এনফিল্ড সাইকেল কোম্পানির হাত ধরে জন্ম নেয় এই বাইক। ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী মোটরসাইকেল ডিজাইন বুলেট সিরিজের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা পায় এই ব্র্যান্ড।
বাংলাদেশে এখন পাওয়া যাচ্ছে রয়্যাল এনফিল্ডের চারটি মডেল— বুলেট ৩৫০, ক্লাসিক ৩৫০, হান্টার ৩৫০ এবং মিটিওর ৩৫০। এগুলো দেশে সংযোজন ও বাজারজাত করছে ইফাদ মোটরস।
এর মধ্যে রয়্যাল এনফিল্ড নিয়ে কিছু নেতিবাচক তথ্য পাওয়া গেছে। যেমন: এই বাইকের মাইলেজ কম, ইঞ্জিন গরম হয়ে যায়, ওজন বেশি, ঢাকার জন্য উপযোগী নয়, রক্ষণাবেক্ষণের ঝামেলা ইত্যাদি। তবে সংশ্লিষ্টদের দাবি রয়্যাল এনফিল্ড বাইক নিয়ে অনেকে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। তাদের আহ্বান, কেউ যেন ভুয়া তথ্য দেখে বিভ্রান্ত না হন। শোরুমে আসুন, সরাসরি দেখে বুঝে তারপর কিনুন। শো-রুমে টেস্ট ড্রাইভ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। বাইক চালিয়ে দেখার সুযোগ আছে।
তবে ক্রেতারা এসব সমালোচনাকে পাত্তা দিচ্ছেন না। কেননা বাইকারদের কাছে রয়্যাল এনফিল্ড অন্যান্য মোটরসাইকেলের চাইতে বেশি কিছু। দৃঢ় ও শক্তপোক্ত গঠন, আরামদায়ক রাইডিং অভিজ্ঞতা, ক্লাসিক লুক ও সাউন্ড, শক্তিশালী ইঞ্জিন, আইকনিক নকশা আর ব্র্যান্ড ভ্যালু এই বাইক বাড়তি আকর্ষণ যোগ করেছে।
তবে ব্যবহারকারীরা যে কিছু সীমাবদ্ধতার কথা বলছেন না তা নয়। সেসব অসুবিধা তারা মেনেই নিয়েছেন। তাদের ভাষ্য রয়্যাল এনফিল্ডের রয়্যাল স্বাদ নিতে চাইলে এসব সমস্যা বড় কিছু না।
তবে একটা তথ্য বেশি সামনে এসেছে। তা হলো- বাংলাদেশে রয়্যাল এনফিল্ডের দাম ভারতসহ অন্যান্য দেশের তুলনায় কিছুটা বেশি। আবার সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই ভারতীয় পণ্য বর্জনের দাবিও তুলছেন। কেউ কেউ বলছেন, উচ্চমূল্য, সীমিত প্রাপ্যতা ও রক্ষণাবেক্ষণের ঝামেলার কারণে এটি এখনো এলিট বাইকারদের গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ। রয়্যাল এনফিল্ড কী কখনো সাধারণ বাইকারদের নাগালে আসবে? থেকে যাচ্ছে এ প্রশ্ন।
