ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

ভাষা সমস্যায় একজনের বদলে অন্যজনের গর্ভপাত!

আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১৫ পিএম

ডাক্তার ও নার্সরা মিলে এক বিদেশিনীর গর্ভপাত ঘটিয়ে দায় এড়াতে ভিন্ন কৌশল নেন। তারা ওই তরুণীর গর্ভপাতের বিষয়টি ভাষাগত সমস্যা হিসাবে সামনে নিয়ে আসেন। এতে করে তরুণী তার গর্ভস্থ সন্তানকে হারিয়ে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন।

মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে ইউরোপের দেশ চেক রিপাবলিকের রাজধানী গ্রাগের একটি হাসপাতালে। বিদেশিনী তরুণী ইউরোপের নন, তিনি বাইরে থেকে চেক রিপাবলিকে গিয়েছিলেন। চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তরুণী রুটিন চেকআপ করাতে প্রাগের একটি বেসরকারি হাসাপাতালে যান। কিন্তু চেকআপ আর হয়নি। উল্টো তরুণী নিজের গর্ভস্থ সন্তানকে হারালেন।

জানা গেছে, এমন মর্মান্তিক ঘটনার জন্য দায়ী হাসপাতালের ডাক্তার এবং নার্সরা। তারা অন্য একজনের পরিবর্তে ওই বিদেশিনী তরুণীর গর্ভপাত ঘটিয়েছেন। ঘটনার পর নিজেদের দোষ ঢাকতে তরুণীর ভাষাকেই দায়ী করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে রুটিন চেকআপ করাতে আসা তরুণীর ভাষা নাকি ডাক্তার ও নার্সরা বুঝতে পারেননি।

তরুণী কোন ভাষায় কথা বলছেন তা বুঝতেই পারেননি ডাক্তার ও নার্সরা। আর ভাষা বুঝতে না পারার কারণেই গর্ভপাত করা হয়েছে। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উল্টো দাবি করেছে, যে গর্ভপাতের সময় তো তরুণী বাধা দেননি। তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকে প্রাগে থাকতে শুরু করেন।

এর আগেও তিন বার তিনি ওই হাসপাতালে যান শারীরিক পরীক্ষার জন্য। প্রত্যেকবরের মত সেদিনও তরুণী হাসপাতালে অপেক্ষা করছিলেন ডাক্তারের জন্য। সূত্রের খবর, একজন নার্স তাকে ভিতরে ডেকে নিয়ে যান। ভেতরে গিয়ে নার্সের নির্দেশ অনুযায়ী হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে পড়েন তিনি। সেখানে দুজন ডাক্তারও উপস্থিত ছিলেন। তরুণীর প্রথমে একটু খটকা লাগলেও প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা হচ্ছে ভেবে আর কিছু বলেননি। ডাক্তাররা ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরই তিনি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন এবং এরপর আর কিছুই মনে নেই তরুণীর।

জ্ঞান ফেরার পর তিনি বুঝতে পারেন গর্ভপাত করা হয়েছে তার। কিন্তু ততক্ষণে সব কিছুই শেষ হয়ে গেছে। ওই একইদিনে অন্য আরেকজন তরুণীর গর্ভপাত করার কথা ছিল। তবে তিনি হাসপাতালে আসতে দেরি করায় বুঝতে ভুল হয়েছে বলে সাফাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

তবে ঘটনাটি জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। এই ভয়াবহ ভুলের সঙ্গে জড়িত কর্মীদের বরখাস্ত করা হয়েছে। কীভাবে এতো বড় ভুল হলো তার জন্য শুরু হয়েছে তদন্ত। চেক সোসাইটি ফর কোয়ালিটি ইন হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডেভিড মার্কস এই ধরণের ঘটনার যাতে আর পুনরাবৃত্তি না হয় তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণের উপর জোর দিয়েছেন। সূত্র: বিবিসি, টাইমস অব ইন্ডিয়া।

SA
আরও পড়ুন