ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, দেশে শান্তি ফেরাতে প্রয়োজনে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়াতে আমি প্রস্তুত।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ‘ইউক্রেন, দ্য ইয়ার ২০২৫’ ফোরামে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি এ কথা জানান। খবর কিয়েভ পোস্টের।
সংবাদ সম্মেলনে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, শান্তি নিশ্চিত হলে তিনি কি পদত্যাগ করবেন? জবাবে জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনের শান্তি নিশ্চিত হলে, যদি সত্যিই আমার পদত্যাগ দরকার হয়, আমি প্রস্তুত। এটার বিনিময়ে ন্যাটো সদস্যপদ চাই।
ন্যাটো সদস্যপদ নিয়ে চাপ:
জেলেনস্কি আগেই জানিয়েছিলেন, ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্য না দিলে দেশের সেনাবাহিনীকে দ্বিগুণ শক্তিশালী করতে হবে। গত সপ্তাহে মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা পিট হেগসেথ বলেছিলেন, ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ এখনই ‘অবাস্তব’।
ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তপ্ত সম্পর্ক:
সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে যুদ্ধ শুরু করার মিথ্যা অভিযোগ করেছিলেন। পরে ট্রাম্প স্বীকার করেন, `রাশিয়াই হামলা করেছিল’- তবে দায় চাপান জো বাইডেন ও জেলেনস্কির ওপর। জেলেনস্কি যখন ট্রাম্পকে `মিথ্যা তথ্যের জগতে থাকা’ বলে প্রত্যুত্তর দেন, ট্রাম্প তাকে ‘স্বৈরশাসক’ বলে অভিহিত করেন। এতে দুই নেতার সম্পর্কে টানাপড়েন তৈরি হয়।
রাশিয়ার রেকর্ড ড্রোন হামলা:
ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরুর তৃতীয় বার্ষিকীর প্রাক্কালে রোববার রাতে রাশিয়া ২৬৭টি ড্রোন হামলা চালায়। এতে অন্তত একজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলেনস্কি একে ‘ইরানি ড্রোন হামলার পর সবচেয়ে বড় আক্রমণ’ বলে উল্লেখ করেন।
মার্কিন সহায়তা ও সম্পদ চুক্তি:
জেলেনস্কি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইউক্রেনের দুর্লভ খনিজ সম্পদ নিয়ে একটি চুক্তির খসড়া প্রস্তুত হচ্ছে। মার্কিন পক্ষ চাইছে ইউক্রেনের এই সম্পদের প্রবেশাধিকার পেতে, বিনিময়ে ইউক্রেন চাইছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। জেলেনস্কি বলেছেন, ‘চুক্তি যেন সামরিক সহায়তা বন্ধ না করে—সেটাই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামত?
জেলেনস্কির মতে, দুই দেশের সম্পর্ক ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর নির্ভর করা উচিত নয়। তিনি বলেন, মার্কিন জনগণ, কংগ্রেস ও সিনেটের সমর্থনই আমাদের প্রধান ভরসা।
ইউক্রেনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের আলোচনা:
জেলেনস্কির প্রধান কর্মকর্তা আন্দ্রি ইয়ারমাক টেলিগ্রামে জানিয়েছেন, মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে ইউক্রেন-মার্কিন চুক্তি নিয়ে ‘গঠনমূলক আলোচনা’ হয়েছে। তিনি মার্কিন দ্বিদলীয় সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
ট্রাম্পকে ‘স্বৈরাচার’ বলার পরও কেন তার সাক্ষাতের আশা করেছেন জেলেনস্কি?