ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

বিশ্ব নেতাদের সমালোচনার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের হুঁশিয়ারি

আপডেট : ১০ আগস্ট ২০২৫, ০৬:৪৭ এএম

গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে ইসরায়েল। তবে তেলআবিব এসব প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকার বার্তা দিয়েছে। নেতানিয়াহুর সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা পরিকল্পনা অনুযায়ীই এগোবে।

বিশ্বনেতাদের সমালোচনার জবাবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, ‘যেসব দেশ আমাদের নিন্দা করছে বা নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিচ্ছে, তারা আমাদের সংকল্প দুর্বল করতে পারবে না।’

কাৎজ আরও বলেন, ‘শত্রুরা আমাদের ঐক্যবদ্ধ শক্তিমুষ্টি নিয়ে এগিয়ে আসতে দেখবে, যা তাদের ওপর প্রবল আঘাত হানবে।’

আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা সিটির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার এ পরিকল্পনাকে ইসরায়েলের বৃহৎ লক্ষ্য—সমগ্র গাজা উপত্যকা দখলের কৌশলগত অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে উপত্যকার প্রায় ৭৫ শতাংশ এলাকা ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। গাজা সিটি দখলের মাধ্যমে এটি বেড়ে দাঁড়াবে ৮৫ শতাংশে।

তবে গাজা দখল ইসরায়েলের জন্য নতুন কিছু নয়। ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েল গাজাসহ পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম, গোলান মালভূমি এবং সিনাই উপত্যকা দখল করেছিল। গাজায় ইহুদি বসতিও স্থাপন করা হয়েছিল। তবে ২০০৫ সালে দেশটি গাজা থেকে সেনা ও বসতি প্রত্যাহার করে নেয়।

তবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজ’-এর বিশ্লেষক ফিলিস বেনিস মনে করেন, ২০০৫ সালের সেই প্রত্যাহার কৌশলগত ছিল মাত্র। বাস্তবে গাজার ওপর ইসরায়েলের দখলদারি কখনোই শেষ হয়নি—শুধু রূপ পরিবর্তন করেছে।

‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং প্যালেস্টাইন অ্যান্ড ইসরায়েল’ বইয়ের লেখক ফিলিস বেনিস বলেন, ‘ইসরায়েলি সেনারা গাজার রাস্তায় না থাকলেও উপত্যকার চারপাশে তাদের অবস্থান বজায় রয়েছে। চারদিকে গড়ে তোলা হয়েছে সশস্ত্র প্রাচীর। আর এখন, দুর্ভিক্ষগ্রস্ত ও বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষের ওপর সামরিক হামলা ভয়াবহ মাত্রায় বেড়েছে।’ তার মতে, বর্তমানে যা হচ্ছে তা গাজা পুনর্দখল ছাড়া কিছু নয়।

গাজা সিটি দখলের ঘোষণার পর শনিবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবাদ হয়েছে। জার্মানি, নরওয়ে, সুইডেন, স্টকহোম, নেদারল্যান্ডস, আর্জেন্টিনা ও মালয়েশিয়ায় ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেয় বহু মানুষ। এ বিষয়ে জরুরি আলোচনার জন্য রবিবার আরব লীগ বৈঠক আহ্বান করেছে।

এদিকে শনিবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২১ জন নিহত হয়েছেন ত্রাণ সংগ্রহের সময়, ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে অনাহারে। এখন পর্যন্ত গাজায় অনাহারে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১২ জনে, যাদের মধ্যে ৯৮ জনই শিশু। গণহত্যার আশঙ্কাজনক এই পরিস্থিতিতে মোট নিহতের সংখ্যা এখন ৬১ হাজার ৩৬৯ জনে পৌঁছেছে।

KHK
আরও পড়ুন