ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ফোনালাপে তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পুতিনের সাম্প্রতিক বৈঠক নিয়ে আলোচনা করেছেন।
সোমবার (২৫ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় ইরানের আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা মেহের। ইরানের প্রেসিডেন্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ফোনালাপের বিষয়বস্তু নিয়ে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, পেজেশকিয়ান আলাস্কা আলোচনার ফলাফলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এবং তিনি আশা করছেন এই আলোচনা ইউক্রেন সংকটের দ্রুত সমাধানে অবদান রাখবে।
আলাপে আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ পরিবহন করিডোরের মাধ্যমে পারস্য উপসাগরকে রাশিয়া ও মধ্য এশিয়ার সাথে সংযুক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী রেলপথের নির্মাণ তদারকি করার প্রতিশ্রুতিও দেন ইরানের প্রেসিডেন্ট। এটি ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী বাস্তবায়িত হচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাশিয়া এবং চীনের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য ইউরেশিয়ান অর্থনৈতিক ইউনিয়ন (ইএইইউ), সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) এবং ব্রিকসের মতো আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার গুরুত্বও তুলে ধরেন তিনি।
এছাড়াও, পেজেশকিয়ান তার সাম্প্রতিক আর্মেনিয়া সফরের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি পুতিনকে জানিয়েছেন, আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ানের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছেন যে আজারবাইজান ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিতে ইরানের উদ্বেগগুলি সম্পূর্ণরূপে বিবেচনা করা হবে। পেজেশকিয়ান ককেশাস অঞ্চলের সমস্যা সমাধানের জন্য ইরান ও রাশিয়াকে সম্পৃক্ত করে ৩+৩ সংলাপ কাঠামোর পক্ষেও কথা বলেছেন।
জবাবে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার সাম্প্রতিক আলোচনার মূল বিষয়গুলো এবং ফলাফলগুলো তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় ইতিবাচক ফলাফল অর্জিত হয়েছে যা ইউক্রেনে চলমান সংঘাতের সমাধানের দিকে পরিচালিত করতে পারে।
পুতিন মস্কো এবং তেহরানের মধ্যে সম্পর্ককে গঠনমূলক এবং ধারাবাহিকভাবে উন্নত বলেও বর্ণনা করেন এই ফোনালাপে। তিনি জানান, চলতি বছরের প্রথমার্ধে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যে ১১ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে।
তিনি পারস্পরিক প্রকল্পগুলোতে অগ্রগতির কথা উল্লেখ করেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাশত-আস্তারা রেলপথ নির্মাণ এবং বুশেহর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কিত সহযোগিতা। তিনি বলেন, এসব প্রকল্পের সন্তোষজনক অগ্রগতি হয়েছে এবং এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নতুন জ্বালানি স্থানান্তরও চলছে।
পুতিন ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকারের প্রতি রাশিয়ার দৃঢ় সমর্থন নিশ্চিত করে এটিকে তাদের অংশীদারিত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য দিক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে জাতিসংঘের রেজোলিউশন ২২৩১-কে ঘিরে আলোচনা একটি অনুকূলে সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে।
