ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দিকে যাওয়া ত্রাণবাহী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ৪৪টি জাহাজের মধ্যে ৪৩টি জাহাজই আটক করেছে ইসরায়েল নৌবাহিনী। এর ফলে আর মাত্র একটি জাহাজ এখনো গাজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ অন্তত ৩১৭ জন কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আয়োজকরা।
ইসরায়েল জানিয়েছে, গাজাগামী ত্রাণবাহী ৪৪টি জাহাজের মধ্যে একটি জাহাজ ছাড়া সবগুলোকে আটক করা হয়েছে। গাজা অভিমুখী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার সব জাহাজ আটকের দাবি করে ত্রাণবাহী এই নৌবহরের যাত্রা গাজায় পৌঁছানোর আগেই শেষ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে এসব জাহাজ আটকাতে গিয়ে কোনো বড় ঘটনা ঘটেনি বলেও জানিয়েছে তারা।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘হামাস-সুমুদ ফ্লোটিলার কোনো উস্কানিমূলক জাহাজ সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ অথবা নৌ অবরোধ ভাঙতে পারেনি। জাহাজের সব যাত্রী নিরাপদ এবং সুস্থ আছেন। তারা নিরাপদে ইসরায়েলে যাচ্ছেন। সেখান থেকে তাদের ইউরোপে নির্বাসিত হবে।’
তবে একটি জাহাজ এখনো সমুদ্রে অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাদের দাবি, কারিগরি ত্রুটির কারণে এটি সমুদ্রে আছে। কিন্তু জাহাজটি গাজার কাছে পৌঁছাতে পারেনি। এই জাহাজটিও যদি গাজার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে এটিকেও আটকানো হবে।
আটক হওয়া কর্মীরা এসেছেন নানা দেশ থেকে- স্পেন, ইতালি, ব্রাজিল, তুরস্ক, গ্রিস, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, সুইডেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ ৩৭টি দেশের নাগরিক রয়েছেন তাদের মধ্যে।
ট্র্যাকারের তথ্য অনুযায়ী, মিকেনো নামের একটি জাহাজ গাজার আঞ্চলিক জলসীমায় প্রবেশ করেছিল। তবে উপকূল থেকে মাত্র ৯.৩ নটিক্যাল মাইল দূরে থাকতেই এর সিগন্যাল হারিয়ে যায়।
‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, বহু বছরের ইসরাইলি অবরোধ চ্যালেঞ্জ করতে তারা গাজা অভিমুখে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী তাদের জাহাজ ঘিরে ফেলে।
অ্যাক্টিভিস্টরা জানান, জ্যামিংয়ের কারণে জাহাজগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, ইসরায়েলি নৌবাহিনীর জাহাজ বহরের কাছে পৌঁছে দিক পরিবর্তনের নির্দেশ দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা বন্দর থেকে খাদ্য ও ওষুধে পূর্ণ ৪৩টি নৌযানের বহর নিয়ে গাজার উদ্দেশে রওনা দেয় গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। এরপর ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর তিউনিসিয়া ও ইতালির সিসিলি দ্বীপ থেকে আরও নৌযান এই বহরে যুক্ত হয়।
জাহাজগুলোতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে আছেন সুইডেনের পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক বর্ণবাদবিরোধী নেতা ও প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলা এবং তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, বেলজিয়ামের ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা, আইনজীবী, অধিকারকর্মী, চিকিৎসক ও সাংবাদিকসহ ৪৪টি দেশের ৫০০ জন নাগরিক। সূত্র: আলজাজিরা, টাইমস অব ইসরায়েল, আনাদোলু
অবরোধ ভাঙতে গাজার দিকে আরও এক ফ্লোটিলার জাহাজ
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজগুলো আটক করছে ইসরায়েল