ঢাকা
মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

বরখাস্ত হলেন যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের ২ সদস্য

আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:২৬ এএম

আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের ২ সদস্যকে বরখাস্ত করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে লবি রুলস ভঙ্গের অভিযোগ করা হয়েছে। তারা হলেন লর্ড রিচার্ড ড্যানাট ও লর্ড ডেভিড ইভান্স। একটি আন্ডারকভার তদন্তে দ্য গার্ডিয়ান তাদের অনিয়মের প্রমাণ প্রকাশ করেছে। এর ফলে তাদের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

 

সোমবার (২৪ নভেম্বর) দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান লর্ড ড্যানাটকে চার মাসের জন্য বরখাস্ত করা হচ্ছে। তদন্তে দেখা গেছে, তিনি বেসরকারি ক্লায়েন্টদের পক্ষ থেকে সরকারি মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং এর বিনিময়ে আর্থিক সুবিধাও নিয়েছেন। আন্ডারকভার সাংবাদিকদের তিনি জানান, তিনি ইচ্ছা করলে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে পারেন।

 

পরবর্তীকালে দ্য গার্ডিয়ান আরও তিনটি ঘটনায় তার আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে সরকারি প্রভাব খাটানোর তথ্য প্রকাশ করে।

 

ড্যানাট পরে এক বিবৃতিতে বলেন, আমার ব্যক্তিগত সম্মান নিয়ে কমিশনের পর্যবেক্ষণে আমি দুঃখিত। আপিল করলে সময় নষ্ট হতো, তাই আমি শাস্তি মেনে নিচ্ছি। জাতীয় স্বার্থে কাজ করলেও তা নিয়ম ভাঙার অজুহাত হতে পারে না বলেও জানান তিনি।

 

এদিকে লেবার দলের লর্ড ডেভিড ইভান্সকে পাঁচ মাসের জন্য বরখাস্ত করা হচ্ছে। আন্ডারকভার সাংবাদিকদের তিনি বাণিজ্যিক স্বার্থে অন্য এমপিদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। তদন্তে তার বিরুদ্ধে চারটি নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এ ঘটনায় লর্ড ইভান্সকে দলীয় হুইপ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

 

দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, তিনি তার ছেলের ব্যবসার জন্য হাউস অব লর্ডসে বাণিজ্যিক ইভেন্ট আয়োজনেও প্রভাব খাটিয়েছেন। তার ছেলে রিচার্ড ইভান্স ইভেন্টে অংশগ্রহণের জন্য ৪০০ পাউন্ডের বেশি ফি নিচ্ছিলেন, যা পার্লামেন্টের নিয়মের স্পষ্ট লঙ্ঘন। সতর্কতা দেওয়ার পরও এসব ইভেন্ট বন্ধ হয়নি।

 

ইভান্স আন্ডারকভার সাংবাদিকদের বলেন, এখন লেবার পিয়ার হওয়া দারুণ, কারণ আমাদের পরিচিতরা এখন সিনিয়র পদে আছে।

 

তদন্তে ড্যানাটের বেশ কয়েকটি ‘অপ্রত্যাশিত’ লবিং কর্মকাণ্ড উঠে এসেছে। এর মধ্যে ২০২২ সালে একটি সার কারখানা কেনার উদ্যোগে সরকারি সহায়তা আদায়ের জন্য তিনি মন্ত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এর তিন দিন পরই তিনি ২,০০০ পাউন্ড পান এবং পরে আরও তিনটি সমপরিমাণ অর্থ গ্রহণ করেন।

 

এরপর ২০২৩ ও ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা কোম্পানি টেলেডাইনের পক্ষে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি লেখেন। চিঠিতে তিনি ফিলিস্তিন অ্যাকশনের বিরুদ্ধে সরকারি পদক্ষেপের আশ্বাস চান।

 

এছাড়া ২০২৪ সালে ঘানায় একটি স্বর্ণ খনি কোম্পানির পক্ষ থেকে তিনি দেশটির ব্রিটিশ দূতাবাসে লবিং করেন। ওই কোম্পানিতে তার নিজস্ব শেয়ারও ছিল।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই কেলেঙ্কারি হাউস অব লর্ডসের জন্য বড় একটি আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে আরও কয়েকজন লর্ডকে তদন্তের পর শাস্তি দেওয়া হয়েছিল, যার সূত্রপাতও দ্য গার্ডিয়ানের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে হয়েছিল।

 

দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ড্যানাট ও ইভান্স উভয়েই শুরুতে অভিযোগ অস্বীকার করলেও শেষ পর্যন্ত শাস্তি মেনে নিতে বাধ্য হন।

HN
আরও পড়ুন