ঢাকা
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

মধ্যপ্রাচ্যে মাদকের ছড়াছড়ি, খোলা হচ্ছে নতুন নতুন বার

আপডেট : ১৭ মে ২০২৪, ০৪:৩৬ পিএম

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ইসলামের বিষয়ে সংবেদনশীল। মুসিলম বিশ্ব তাদেরকে আলাদাভাবে সম্মান করে। কিন্তু দেশগুলো ধীরে ধীরে ইসলামের বিষয়ে সংবেদনশীলতা প্রদর্শন করা থেকে সরে আসছে। সৌদি আরব, আরব আমিরাত ও কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোতে মদ ছিল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ধীরে ধীরে উঠে যাচ্ছে সেই নিষেধাজ্ঞা।

সম্প্রতি আরব আমিরাত নিজ দেশে বিয়ার তৈরির অনুমোদন দিয়েছে। এমনকি একটি কারখানাও চালু করেছে। অথচ দেশটিতে মদ কেনাবেচা নিষিদ্ধ ছিল। আবুধাবিতে মদ তৈরি করা কোম্পানি ম্যাকগিহি ক্রাফট ঘোষণা দিয়েছে, তারা এই শিল্পকে এই স্থানে নিয়ে যাবে যাতে করে জার্মানি, নিউ ইয়র্ক ও সান দিয়েগো থেকে আবুধাবিতে বিয়ার খেতে আসে। আর তারা এটা করতে সক্ষম হবে কেননা আমিরাতের শাসকরা এই জন্য তাদেরকে পৃষ্টপোষকতা দেবে।

দেশটি ইতোমধ্যে অ্যালকোহল সম্পর্কিত আইন শিথিল করেছে। গত বছর অ্যালকোহলের উপর ৩০ শতাংশ ট্যাক্স বাতিল করেছে। এমনকি অমুসলিমদের লাইসেন্সকৃত মদের বার থেকে মদ কেনার অনুমতি দিয়েছে। সেই সাথে অনুমোদনের উপর থেকে চার্জও সরিয়ে নিয়েছে। দেশটিতে ২০২৩ সালে ২৪ মিলিয়ন পর্যটক ভ্রমণ করেছে। দেশটি আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে পর্যটকের সংখ্যা ৪০ মিলিয়নে নিয়ে যেতে চায়। আর এ জন্যই তারা অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন মাদকের বৈধতা দিচ্ছে।

১৯৫২ সাল থেকে সৌদি আরবে অ্যালকোহল বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল। ১৯৫২ সালে দেশটির বাদশাহ আব্দুল আজিজের এক ছেলে অ্যালকোহল পান করে মাতাল হয়ে একজন ব্রিটিশ কূটনীতিককে গুলি করে হত্যা করেন। এরপর সম্পূর্ণ অ্যালকোহল বিক্রি নিষিদ্ধ করে দেশটি। সৌদি আরবেই অবস্থিত মুসলমানদের পুণ্য ভূমি মক্কা ও মদিনা। মুসলমানরা এ জন্য দেশটির শাসক গোষ্ঠীকে আলাদাভাবে সম্মান করেন।

বর্তমান শাসক বিন সালমান একের পর এক ইসলাম বিরোধী আইন জারি করে যাচ্ছেন। রক্ষণশীল দেশ হলেও বর্তমানে দেশটিতে সিনেমা ব্যবসা রমরমা। দিয়েছে অ্যালকোহল পানেরও অনুমতি। তবে সেটা খুবই সীমিত। দেশটি অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতো। এখন দেশটি পর্যটন নির্ভরশীল হওয়ার পথে হাঁটছে।

২০২২ সালে কাতারে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশটি প্রথমে অ্যালকোহলের অনুমতি দিতে না চাইলেও পরে দিতে বাধ্য হয়েছে। অথচ দেশটিতে অ্যালকোহল কেনাবেচা এমনকি বহনও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। 

অ্যান্ড্রু বার্গেস যুক্তরাজ্যের নাগরিক। তিনি দীর্ঘ দিন থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বসবাস করেন। একসময় সবাই তাকে বলতো তুমি একজন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হয়ে রক্ষণশীল এই দেশগুলোতে কীভাবে বসবাস করো। অ্যান্ড্রু বার্গেস বলেন, প্রথম দিকে আমার কাছে মধ্যপ্রাচ্যেরই দেশগুলোকে খুব রক্ষণশীল দেশই মনে হতো। মানিয়ে নিতে খুব কষ্ট হতো। কিন্তু এখন অনেক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের চেয়েও বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। তথ্য সূত্র: বিবিসি নিউজ, দ্য গার্ডিয়ান। 

WA/SA
আরও পড়ুন