ইরান-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলায় উভয়পক্ষেই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ধ্বংস হয়েছে সামরিক-বেসামরিক বহু স্থাপনা। শক্তিশালী দুই দেশের সংঘাত ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে। তৈরি হয়েছে সর্বাত্মক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও। এ অবস্থায় কূটনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছে ইউরোপের তিন প্রভাবশালী দেশ-জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য।
রোববার (১৫ জুন) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।
আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে বলেছে, সংঘাত বন্ধে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছে জার্মানি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য। এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য তেহরানকেই চাপ দিচ্ছে দেশগুলো।
বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে সফররত জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়াদেফুল এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তার দেশ ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সমন্বয় করে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে অবিলম্বে আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত।
জার্মান পাবলিক ব্রডকাস্টার এআরডিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি এখনও আশা করি এটা সম্ভব। আমরা আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছি এবং ইরান যদি প্রস্তুত থাকে, তাহলে এখনই সেটা শুরু করা উচিত।’
ওয়াদেফুল আরও বলেন, এই প্রস্তাবের পেছনে মূল উদ্দেশ্য হলো পারমাণবিক ইস্যু ঘিরে উত্তেজনা প্রশমনের মাধ্যমে বৃহত্তর সংঘাত প্রতিরোধ করা।
তিনি বলেন,‘এই আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো-ইরান যেন তার পারমাণবিক কর্মসূচিকে এমনভাবে পরিচালিত না করে যাতে তা অঞ্চল, ইসরাইল বা ইউরোপের জন্য হুমকিতে পরিণত হয়।’
ইউরোপীয় এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র সংকট নিরসনে কার্যকর ভূমিকা পালন না করলে ইউরোপীয় উদ্যোগ কতটুকু কার্যকর হতে পারে তা নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে।
তবে ইউরোপীয় এই পদক্ষেপ সফল হলে একদিকে যেমন মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, অন্যদিকে এটি পশ্চিমা জোট ও ইরানের মধ্যকার দীর্ঘদিনের পরমাণু আলোচনার নতুন পথও খুলে দিতে পারে। তবে এই প্রস্তাব ইরান কতটা আন্তরিকভাবে বিবেচনা করে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এদিকে, চলমান এ যুদ্ধপরিস্থিতি সৌদি আরব, তুরস্ক, কাতার, পাকিস্তান, ভেনেজুয়েলাসহ আরও অনেক দেশ ইসরায়েলকে উত্তেজনার জন্য দোষারোপ করেছে। তারা অবিলম্বে ইসরায়েলকে দখলদারি মনোভাব পরিহার করে শান্তির পথে হাঁটার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে।
