ইরানের রাজধানী তেহরানে গত সোমবার (১৬ জুন) ইসরায়েলের হামলায় দেশটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের বাসভবনও আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি ওয়ালিদ ইসলামের বাড়িঘর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে হামলার সময় ওই কর্মকর্তা বাড়িতে না থাকায় প্রাণে বেঁচে গেছেন। খবর বিবিসি বাংলা।
তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা মূলত জর্ডান নামের একটি এলাকায় বসবাস করেন, যেটি তেহরানের তিন নম্বর জেলায়। ওই এলাকায় ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে, যেগুলোতে সোমবার ঘোষণা দিয়ে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হামলার আগে বাসিন্দাদের সরে যেতে বলা হয়। এতে প্রাণহানি কিছুটা কম হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য স্থাপনা।
বাংলাদেশি দূতাবাসের কর্মকর্তা ওয়ালিদ ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘আমার বাসা পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। আশপাশে এখন আর কিছুই নাই। কেবল কূটনীতিকদের কয়েকটি বাড়ি টিকে রয়েছে।’
ইরানের রাজধানীতে অবস্থানরত অনেক বাংলাদেশি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেকেই ফোন দিয়ে কান্নাকাটি করছেন। বলছেন, এখানকার পরিস্থিতি ভালো না ভাই, আমাদের বাঁচান। বন্দর আব্বাসের পরিস্থিতিও খারাপ। ফলে ওই এলাকা থেকেও অনেকে ফোন দিচ্ছেন, আর কান্নাকাটি করছেন। এই আর্তনাদ আসলে সহ্য করা যায় না।’
বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২০ জন মানুষ সম্প্রতি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে তেহরানে গেছেন জানিয়ে ওয়ালিদ ইসলাম বিবিসি বাংলাকে জানান, মূলত তারা কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের জন্য এখানে এসেছিলেন। তেহরানে যাওয়ার পর থেকে তারা শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছিলেন। কিন্তু গত শুক্রবার ইরান-ইসরায়েল সংঘাত শুরু হওয়ার পর তাদের হাসপাতাল এলাকায় অবস্থান করার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। হাসপাতাল নিরাপদ হবে ভেবেই আমরা এই পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু গত পরশুদিন হাসপাতালেও আক্রমণ হয়েছে। এতে রোগী ও তাদের স্বজনরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।’
দূতাবাসের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘তাদের শান্ত করার জন্য আমি সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। কীভাবে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া যায়, সেই চেষ্টাও চলছে।
মঙ্গলবার ঢাকায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক জানিয়েছেন, ‘তেহরানে বর্তমানে ৪০০ জনের মতো বাংলাদেশি অবস্থান করছেন। তারা সবাই অক্ষত রয়েছেন। জরুরি প্রয়োজনে তারা যেন যোগাযোগ করতে পারেন, এজন্য ‘হটলাইন’ চালু করেছে তেহরানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। সেইসঙ্গে, ঢাকাতেও আরেকটি হটলাইন চালু করা হয়েছে।’
এএইচএ
