ভারত-শাসিত কাশ্মিরে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি) জরুরি বৈঠক ডেকেছে। মূলত ভারতের কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ার জবাব দিতেই বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ এই বৈঠক ডেকেছে।
এই ঘটনায় পাকিস্তানের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে ভারত। এছাড়া পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে ভারত। এতে করে দুই দেশের সম্পর্কে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ডের।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার জেরে ভারতের কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ার জবাব দিতে পাকিস্তান তাদের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) জরুরি বৈঠক ডেকেছে।
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জানান, এ বৈঠকে সামরিক ও বেসামরিক শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন এবং সাধারণত কেবলমাত্র বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলা বা বহিরাগত হুমকির সময় এই ধরনের বৈঠক ডাকা হয়।
এর আগে, হামলার পর ভারতের পক্ষ থেকে বুধবার বেশ কিছু কূটনৈতিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ভারত পাকিস্তানকে “সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদে” সহায়তার অভিযোগ এনে পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করে এবং উভয় দেশের মধ্যকার প্রধান স্থল সীমান্তও বন্ধ করে দেয়।
এছাড়া পাকিস্তানি কূটনীতিকদের বহিষ্কার এবং ভারতে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদের কিছু ভিসা বাতিল ও দুই দিনের মধ্যে তাদের ভারত ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়।
এদিকে পাকিস্তান এই হামলাকে ভারতের “ফলস ফ্ল্যাগ (সাজানো ঘটনা)” অপারেশন বলে আখ্যা দিয়েছে। অর্থাৎ তারা দাবি করছে, ভারত নিজেরাই এই হামলা সাজিয়েছে যেন পাকিস্তানের ওপর দোষ চাপানো যায়। পাকিস্তান আরও জানিয়েছে, ভারতের কূটনৈতিক সিদ্ধান্তগুলোর “প্রত্যুত্তরমূলক জবাব” দেওয়া হবে।
হামলাটি ঘটে মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মিরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে, যা হিমালয়ের পাদদেশে মনোরম একটি এলাকা। সেখানে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা পর্যটকদের ওপর গুলি চালায়।
এই হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে একজন ছাড়া সবাই ভারতীয় নাগরিক। নিহতদের মধ্যে একজন কেবল নেপালের নাগরিক ছিলেন। গত ২৫ বছরে কাশ্মীরে এটি ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ বেসামরিক হত্যাকাণ্ড।
ভারতের পুলিশ দাবি করেছে, এই হামলার পেছনে স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহীদের হাত রয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও গোষ্ঠী হামলার দায় আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি।
